যত্নে রাখুন পা দুখানি
সপ্তাহজুড়ে ব্যস্ততায় পায়ের দিকে নজর দেওয়ার সময় কই? কিন্তু ভেবে দেখুন, আমাদের পা দুটি কত গুরুত্বপূর্ণ। এরা আমাদের সারা শরীরের ভার বহন করে। পা ঠিক না থাকলে সারা সপ্তাহ ছোটাছুটিই বা কীভাবে করবেন? তাই অন্তত একদিন পা দুটির দিকে খানিকটা মনোযোগ দেওয়া উচিত। আর সে জন্য ছুটির দিনটাই না-হয় বেছে নিলেন।
ভালো করে দেখুন
পায়ের ফাঁকে ঘা বা ছত্রাক সংক্রমণ হতে পারে। পায়ের নিচে হয়তো পড়েছে কড় বা লুকিয়ে আছে কোনো আঘাত, যা আপনি টেরই পাননি। ডায়াবেটিসের রোগীদের পায়ের স্নায়ুতে সমস্যার কারণে অনুভূতি ভোঁতা হয়ে যায়। ফলে তাঁরা অনেক ছোটখাটো আঘাত, পোড়া বা কাটাছেঁড়ার মতো সমস্যা টেরই পান না। কিন্তু তা থেকে হতে পারে সংক্রমণ, এমনকি গ্যাংগ্রিন। তাই পা ভালো করে দেখুন। রঙে যেকোনো পরিবর্তন, দাগ ইত্যাদি সাবধানে খেয়াল করুন। আঙুলের ফাঁকগুলো দেখুন। আর পায়ের তলা দেখার জন্য একটা আয়নার সাহায্য নিন।
পা রাখুন পরিষ্কার
সময় নিয়ে পা দুটি পরিষ্কার করুন। প্রয়োজনে একটা গামলায় হাল্কা গরম জলে শ্যাম্পু বা সাবান মিশিয়ে তাতে কিছুক্ষণ (৫ থেকে ১০ মিনিট) দুই পা চুবিয়ে রাখুন। স্পনজ দিয়ে ঘষে ঘষে ময়লা ও মরা ত্বক উঠিয়ে ফেলুন। নখের নিচ ও আঙুলের ফাঁকগুলোও ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। পা ধোয়া শেষে পরিচ্ছন্ন কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে খুব ভালো করে মুছে শুষ্ক করুন। কোথাও যেন জল লেগে না থাকে। এবার পায়ে ভালো করে কোনো ফুট ক্রিম বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগান।
নখ কাটার নিয়ম
ছুটির দিনেই সাধারণত আমরা নখ কাটি। এ কাজেরও আছে কিছু সতর্কতা। স্নানের পর বা পা ধোয়ার পর নখ নরম হয়, তখন কাটাই ভালো। নখ কাটতে হবে সামনের দিকটা সমান্তরাল করে। দুই দিকে কোনা করে নয়। বেশি গভীর করে কাটবেন না, এতে নখ ভেতরে দেবে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
পায়ের ম্যাসাজ
সপ্তাহে একদিন পায়ে ম্যাসাজ করলে রক্ত চলাচল বাড়বে, ক্লান্তি দূর হবে। পা পরিষ্কার করার পর ম্যাসাজ করতে পারেন। বুড়ো আঙুল বাঁকা করে পায়ের তলার দিকে কয়েকবার লাগানোর চেষ্টা করুন। পেশিগুলোয় টান (স্ট্রেচ) পড়বে। এবার প্রতিটি আলাদা আঙুলকে টেনে টেনে পেশিগুলোকে স্ট্রেচ করুন। হাত দিয়ে পায়ের ধার ও গোড়ালি ম্যাসাজ করুন।
পায়ের গুরুত্ব
পায়ের ত্বক বা অন্য যেকোনো পরিবর্তনকে গুরুত্বের সঙ্গে নিন—বিশেষ করে, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ বা বাত আর্থ্রাইটিসের রোগীরা। রক্ত চলাচল কমে গেলে বা সংক্রমণ হলে পা কালো, লালচে হয়ে যেতে পারে। পায়ে জল হওয়া বা ফুলে যাওয়া হচ্ছে নানা রোগের লক্ষণ। পায়েই সবচেয়ে বেশি ছত্রাক সংক্রমণ হতে পারে। ত্বকের সমস্যাও হতে পারে। তাই পায়ে কোনো সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।