আগামী মাস থেকে একঝাঁক পণ্যের দাম বাড়তে চলেছে
বাজেট পর্যন্ত অপেক্ষা নয়। তার আগেই একঝাঁক পণ্যের দাম বাড়তে চলেছে। মূল্যবৃদ্ধির আঁচ এতদিন ধরে উত্তপ্ত রেখেছে সব্জি থেকে খাদ্যপণ্য, যাবতীয় নিত্যপণ্যকে। এবার সেই আঁচ লাগতে চলেছে গৃহস্থালীর পণ্যেও। লাগাতার মুদ্রাস্ফীতির হার বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন উৎপাদন সেক্টরের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের আমদানি বন্ধ থাকার জোড়া সঙ্কটে প্রধানত ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল, মোবাইল এবং ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন খরচ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। সেই কারণেই আগামী মাস থেকে এয়ারকন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন, রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন সেটের দাম বাড়তে চলেছে ভারতের বাজারে। একইভাবে বেড়ে যাবে মোবাইল হ্যান্ডসেটের দামও। দেশের উৎপাদন সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠন এই মর্মে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বণিকসভাকে সতর্ক করেছে। অন্তত ৩ থেকে ৫ শতাংশ হারে বাড়বে এই জিনিসপত্রের দাম। মুদ্রাস্ফীতির হার মাত্রাছাড়া হওয়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে সংস্থাগুলি।
বিশেষ করে ইস্পাত, তামা, অ্যালুমিনিয়াম, জিঙ্কের মতো ধাতুর দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১১ শতাংশ। অশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ১৬ শতাংশ। মূল্যবৃদ্ধির জেরে উৎপাদন শিল্প ধাক্কা খাচ্ছে। লকডাউনের কারণে বিদেশ থেকে নানাবিধ সস্তার যন্ত্রাংশ, ধাতব উপকরণ, কাঁচামাল আসা একপ্রকার তলানিতে। সেই কারণেই দেশীয় উপকরণের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু গোটা দেশের বাজারকে সরবরাহ করার ক্ষমতা এখনও নেই দেশীয় কাঁচামালের। উল্টে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও ধাতুর দাম বেড়ে যাওয়ায়, বর্ধিত মূল্যেই কাঁচামাল কিনতে হচ্ছে সংস্থাগুলিকে।
এই ভোগ্যপণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি সঙ্কট তৈরি হয়েছে মোবাইল উৎপাদনে। মোবাইল চিপসেট সাপ্লাই কমে এসেছে বিপুলভাবে। ২০২০ সালে এর আগে মোট তিনবার মোবাইল হ্যান্ডসেটের দাম বেড়েছে। এবার চতুর্থবারের জন্য আবার দাম বাড়তে চলেছে। চীন, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ডের থেকে ভারতে বহু পণ্য আমদানির উপর নিয়ন্ত্রণ জারি হয়েছে। মার্চ মাস থেকে লকডাউনের জেরে চাহিদা ছিল কম। ফলে আর্থিক লেনদেন কম হয়েছে। কিন্তু গত তিনমাস ধরে বাজারে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা তৈরি হয়েছে। দেওয়ালি ও উৎসবের মরশুমে যথেষ্ট ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু দ্রব্যমূ্ল্য বেড়ে চলায়, সংশয় তৈরি হয়েছে। আশঙ্কা, যদি ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে, তাহলে ক্রয়প্রবণতাও পুনরায় ধাক্কা খাবে। আটকে যাবে অর্থনীতির চাঙ্গা হওয়া।