দীর্ঘ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি, কৃষক বিক্ষোভে যোগ দিচ্ছেন উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানের কৃষকরাও
কৃষক আন্দোলনে একে একে যোগ দিচ্ছেন রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশের কৃষকরা। গতকাল দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে কৃষকদের ‘লং মার্চ’ বিস্তর গোলমালের পর প্রশাসন কৃষকদের অনুমতি দেয় দিল্লিতে প্রবেশের। দিল্লির বুরারি মাঠে কৃষকদের জমায়েত করার অনুমতি দেওয়া হয়। তারপরে শনিবার সকাল থেকে খবর আসে, পঞ্জাবের ফতেগড় সাহিব থেকে বিপুল সংখ্যায় কৃষকরা দিল্লি সীমান্তর দিকে যাচ্ছেন। দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে বৃহস্পতিবার থেকেই কৃষকরা জমায়েত হয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গেই এবার যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে পঞ্জাবের কৃষকদেরও।
এদিকে উত্তরপ্রদেশের ৩০ জন কৃষক ইতিমধ্যে দিল্লির বুরারি মাঠে পৌঁছে গিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। একাধিক কৃষি আইন সংশোধনী বাতিল করার দাবিতে দীর্ঘ আন্দোলনের অংশ হিসাবে বুরারি মাঠেই জমায়েত হওয়ার কথা দেশের বিভিন্ন অংশের কৃষকদের। সেইখানেও ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কৃষকরা বলেছেন, ওই মাঠে তাঁরা ততক্ষণ জমায়েত করবেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত তাঁদের কথা সরকার শোনে। বুরারি মাঠে উত্তরপ্রদেশের কৃষকরা জমা হয়ে জানিয়েছেন, আরও বিভিন্ন রাজ্য থেকে কৃষকদের দল এই মাঠে এসে জমায়েত হবেন। তাঁরাই জানিয়েছেন রাজস্থানের কৃষকরাও দিল্লি সীমান্তে জমায়েত করতে শুরু করেছেন।সূত্রের খবর, উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে দিল্লি পুলিশকে। জমায়েত বিপুল আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য, কৃষক আন্দোলন নিয়ে কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দেন সিঙ্গুর আন্দোলনের কান্ডারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘নয়া কৃষি আইন কৃষকদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এই আইন কালোবাজারি-লুঠেরাদের সাহায্য করছে।’বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করার সময় ফের একবার এই আইন নিয়ে কেন্দ্রকে তুলোধোনা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (Bengal CM)। কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর বার্তা, ‘ডাকলে আমিও দিল্লি যাব। আপনাদের পাশে দাঁড়াব। আন্দোলন করব।’
কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযানকে বাধা দিতে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে দিল্লি সীমান্তে। কৃষকদের রাজধানীতে প্রবেশ করতে না দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তারা। কৃষকদের ট্রাক্টর আটকাতে বালি ভর্তি ট্রাক দিয়ে সিঙ্ঘু সীমান্ত ঘিরে রেখেছে দিল্লি পুলিশ। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কোনো বিক্ষোভে বিক্ষোভকারীদের আটকাতে এই প্রথম এরকম উপায় অবলম্বন করলো দিল্লি পুলিশ। জলকামান দিয়ে আন্দোলনকে থামানোর চেষ্টা হয়। তৃণমূল (TMC) এর কটাক্ষ করে বলে হরিয়ানা চিরকাল কৃষিবান্ধব রাজ্য হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু, আজ কেন্দ্রের নতুন আইনের ফলে কৃষকরা পথে এসে দাঁড়িয়েছে। যে জল দিয়ে কৃষকরা এতদিন ধরে চাষের কাজ করতো আজ সেই জল কামানের মাধ্যমে তাদের প্রতিবাদকে ছত্রভঙ্গ করছে। এইভাবে বিজেপি কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করবে?