দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

করোনা আবহে এবার জৌলুসহীন নবদ্বীপের রাস

November 29, 2020 | 2 min read

রাত পোহালেই শুরু নবদ্বীপে ঐতিহ্যপূর্ণ রাসপুজো (Rash Puja)। তারই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। করোনা আবহে এবার অনেকটাই অনাড়ম্বরভাবে উদযাপিত হচ্ছে এই উৎসব।

এবছর জমায়েত এড়াতে শ্রীবাসঅঙ্গন রোডের প্রাচীনতম বিন্ধ্যবাসিনী মাতা এবং নবদ্বীপ ব্যবসায়ী সমিতির শ্যামামাতা পুজোও এবার ঘটেপটে হচ্ছে। তবুও এই আবহের মধ্যে নজর কাড়বে বিশ্বাসপাড়া বিবেকানন্দ কলোনির মহিলাবৃন্দের পরিচালনায় নটরাজ পুজো কমিটি।

এবছর তারা থিম হিসাবে পটচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর জন্ম, শিক্ষা, লীলা ইত্যাদি। বৌবাজারের অন্নপূর্ণা মাতা প্রতি বছর প্রায় পনেরো ফুট প্রতিমা তৈরি করলেও এবছর চার ফুট উচ্চতার প্রতিমা করেছে বলে জানান পূজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা হিমঙ্কর ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, এবছর আমরা প্রতিমা বিসর্জন দেব না। নতুন মন্দির করা হয়েছে। সেখানেই সারা বছর পুজো হবে। পীরতলা নিউ ক্লাবের গঙ্গামাতা বারোয়ারি অন্যান্যবার প্যান্ডেল এবং প্রতিমায় পুরসভা সহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে পুরস্কৃত হলেও করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে প্রতিমা, প্যান্ডেল ছোট করা হয়েছে এবার সম্পূর্ণ অনাড়ম্বরভাবে পুজো করা হচ্ছে বলে জানালেন ক্লাবের সম্পাদক মানিক অধিকারী। তিনি জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুজো মণ্ডপে মাস্ক এবং স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। টাউন ক্লাবের হরিহর মিলন পুজোর উদ্যোক্তারা করোনা প্রতিরোধের সব রকম সতর্কতা অবলম্বন করে এবার পুজো করছেন। অধিকাংশ বারোয়ারি এবার রাসে জমায়েত এড়াতে থিমের পুজো থেকে বিরত রয়েছে।

প্রাচীনত্বে এবং দেবদেবীর মাহাত্ম্যে যেসব মণ্ডপে মানুষের ঢল নামে সেগুলি হল এলানিয়াকালী মাতা, তেঘড়িপাড়ার বড় শ্যামা, জোড়াবাঘ গৌরাঙ্গিনী মাতা, বড়ালঘাটের ভুবনেশ্বরী মাতা, আগমেশ্বরীপাড়া এবং যুবদলের মহিষমর্দিনীমাতা ইত্যাদি। তবে এই সব পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা ছোট করে পুজো করছেন। সরকারপাড়া, উদয়নমাঠে মেলা এবং স্বরূপগঞ্জঘাটে বাউল মেলা এবার বন্ধ রেখেছেন উদ্যোক্তারা।

শাক্ত, বৈষ্ণব এবং শৈবমতে নবদ্বীপ থানা এলাকায় ৩৬৮টি বিভিন্ন দেবদেবীর পুজো হচ্ছে। নবদ্বীপ পুরএলাকায় ২৯৪টি পুজোয় মধ্যে অনুমোদিত পুজোর সংখ্যা ২১৬টি।

এছাড়া বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় ৭৪টি পুজো হচ্ছে। বাবলারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৩০টি, মাজদিয়া-পানশীলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ১৯টি, চরমাজদিয়া-চরব্রহ্মনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে ৯টি, স্বরূপগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতে ৪টি এবং মহিশুরা গ্রাম পঞ্চায়েতে ১২টি পুজো হচ্ছে। এবার মহিলা পরিচালিত পুজোর সংখ্যা ৩। এবছর করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে ও হাইকোর্টের নির্দেশ মানার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারোয়ারিকে তা মানার জন্য জানানো হয়েছে। সে কারণে এবছর নবমী পুজোর শোভাযাত্রা, প্রতিমা নিয়ে দিন ও রাতের আড়ং সবই বন্ধ। রবিবার থেকে পাঁচটি জায়গায় নো এন্ট্রি করা হয়েছে। কোলেরডাঙা সারস্বত মঠ (জলমন্দির), ইদিলপুর রেলগেট, ব্যাদরাপাড়া রেলগেট, কুটিরপাড়া এবং বাবলারি পঞ্চায়েতের সুভাষনগরে।

নবদ্বীপ (Nabadwip) পুরপ্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন বিমানকৃষ্ণ সাহা জানান, পুরপরিষেবা দিতে সবরকমভাবে প্রস্তুত পুরসভা। করোনা পরিস্থিতিতে লোক সমাগম এবার কমই হবে বলে ধারণা। তবুও পুরসভা চারটি যাত্রীশিবির, বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যশিবির করেছে। এছাড়া পানীয় জল, রাস্তাঘাট সংস্কার করা হচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বুধবার এবং বৃহস্পতিবার এই দুইদিন প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া যাবে স্থানীয় পীড়তলার খাল, ফাঁসিতলাঘাট, বড় শ্যামারপুকুর এবং সরকারপাড়ার পুকুরে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#covid-19, #Rash Mela, #Nabadwip

আরো দেখুন