গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে ‘সেফ ফ্রম বিজেপি’ লেখা ফ্লেক্সে ছয়লাপ শিলিগুড়ি
একুশের বিধানসভা ভোটের মুখে রাজ্যের প্রধান বিরোধী শক্তি বিজেপি কার্যত তৃণমূল কংগ্রেসের ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে। সেটা বুঝতে পেরেই বিজেপিকে ‘বধ’ করতে তৃণমূল তার আইটি সেলকে মজবুত করেছে। বিজেপি বিরোধী জনমত গড়তে ‘মার্ক ইউরসেল্ফ সেফ ফ্রম বিজেপি’ (Mark Yourself safe from BJP) লেখা ফ্লেক্স ঝোলানো হচ্ছে। শিলিগুড়িতে পাড়ায় পাড়ায় সেই ফেক্স এখন জ্বলজ্বল করছে। যদিও বিজেপির পাল্টা দাবি, ওসব করে রাজ্যে গেরুয়া ঝড় কেউ আটকাতে পারবে না।
ওই ফ্লেক্সে রয়েছে কিউআর কোড (QR Code)। সেটি স্ক্যান করলেই ‘নিজেকে বিজেপি থেকে সুরক্ষিত চিহ্নিত করুন’ পেজে চলে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই সেখানে ১১ লাখের বেশি লোক নিজেকে চিহ্নিত করেছেন। তৃণমূলের দাবি, এক কোটি টার্গেট নিয়ে ঝাঁপানো হয়েছে। দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি (সমতল) রঞ্জন সরকার বলেন, বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলছে। আমরা জনমত গড়তে পাড়ায় পাড়ায় ফ্লেক্স ঝুলিয়ে লোকজনের সমর্থন আদায় করছি। এখন সকলের হাতেই স্মার্টফোন। ফ্লেক্সের কিউআর কোড স্ক্যান করলেই বিজেপি বিরোধী জনমত গঠনে একজন ভোটার আমাদের হাত শক্ত করতে পারবেন।
বিজেপির শিলিগুড়ি (Siliguri) সাংগঠনিক জেলা কমিটির মুখপাত্র কমল ঘোষ বলেন, আমরা কেন্দ্রের তিন শতাধিক প্রকল্প নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। স্থানীয় এমপি থেকে পাড়ার নেতা, সকলেই ময়দানে আছেন। এভাবে ওরা খাতায়-কলমে জনমত সমর্থন আদায় করতে চাইছে। আসলে ওদের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে, তাই আরও অনেক কিছু ওরা করবে।
দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের (Trinamool) পক্ষ থেকে প্রায় হাজার দশেক এমন ফ্লেক্স ধাপে ধাপে ছাপানোর টার্গেট নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পাড়ার মোড়ে, কলেজ সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গেটে, জনবহুল এলাকায় স্থানীয় ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটরের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। ফ্লেক্সের কিউআর কোড সহজেই স্মার্টফোনে স্ক্যান করা যাচ্ছে। তা স্ক্যান করলেই নির্দিষ্ট লিঙ্কের মাধ্যমে একটি পেজে সরাসরি প্রবেশ করছে। সেখানে পরপর কয়েকটি প্রশ্ন আসছে, যাতে ক্লিক করলে এক থেকে দেড়-দু’মিনিটের পাঁচটি ভিডিও দেখা যাচ্ছে। তাতে আপনি কি ঘৃণার বিরুদ্ধে, আপনি কি বিভেদের রাজনীতির বিরোধিতা করেন, আপনি কি একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলবেন, আপনি কি অসাম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন, আপনি কি ইচ্ছার সীমাবদ্ধতাকে প্রত্যাখ্যান করেন— এমন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর হিসেবে ভিডিও দেওয়া আছে। ওসব দেখে নির্দিষ্ট জায়গায় ক্লিক করলেই সংশ্লিষ্ট সাইটে ফোন নম্বর নথিভুক্ত হয়ে যাচ্ছে। ওই ওয়েব পেজই বলছে, এখনও পর্যন্ত ১১ লক্ষ ২ হাজারের বেশি লোক তাতে নথিভুক্ত হয়ে নিজেকে ‘সুরক্ষিত’ চিহ্নিত করেছেন। তৃণমূল নেতাদের দাবি, তাঁদের ডিজিটাল কমিউনিটিতে প্রায় এক লক্ষ ফেসবুক ফলোয়ার আছেন।
ডিজিটাল দুনিয়ায় প্রচারে পিছিয়ে নেই বিজেপিও (BJP) । সোশ্যাল মিডিয়াকে (Social Media) হাতিয়ার করে তাদেরও জোরদার প্রচার চলছে। পদ্ম শিবিরের নেতাদের দাবি, জনসংযোগ বৃদ্ধি করতে এখন বাড়ি বাড়ি যাওয়া হচ্ছে। জনসংযোগ নিবিড় করতে রবিবারই দলের শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলার ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি ফুলেশ্বরীতে জঙ্গল সাফ করে। বিজেপির দাবি, জঙ্গলের আড়ালে সন্ধ্যার পর নেশার আসর বসে। তাই ‘নেশামুক্তি’ কর্মসূচি নিয়ে এদিন এমন অভিযান চলে। নতুন নতুন চিন্তাভাবনা নিয়ে জনসংযোগ করা হচ্ছে।