স্বাস্থ্য বিভাগে ফিরে যান

ধূমপান ছেড়ে সিওপিডিকে জীবন থেকে তাড়ান 

December 2, 2020 | 2 min read

করোনাভাইরাস (Corona Virus) আমাদের জীবন আমূল বদলে দিয়েছে। এই রোগের কারণেই ফুসফুসের (Lungs) অসুখ ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা COPD নামটা আজ আর আমাদের কাছে অচেনা নয়।

সিওপিডিতে বিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি মানুষ আক্রান্ত। তাঁদের ফুসফুসের বাতাস ভর্তি থলি অ্যালভিওলাই সিওপিডিতে ক্ষতিগ্রস্ত। এঁরা বুক ভরে বাতাস টেনে নিতে গিয়ে কাশতে কাশতে হাঁফিয়ে পড়েন। তাও এঁদের অনেকেই ধূমপান করতে ভোলেন না। এই অসুখের অন্যতম কারণ ধূমপান ও দূষিত পরিবেশ। ফুসফুসের এই ক্রনিক অসুখ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বিশ্ব জুড়ে পালন করা হচ্ছে ওয়ার্ল্ড সিওপিডি ডে। আমাদের দেশে ফুসফুসের এই ক্রনিক সমস্যার ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে।

এক দিকে বায়ুদূষণ অন্য দিকে ধূমপান, এই দুইয়ের সাঁড়াশি আক্রমণে প্রথমে শ্বাসনালী, পরে ফুসফুস ক্রমশ অকেজো হতে শুরু করে। কোভিড ১৯ অতিমারির আগে সিওপিডি বিষয়টা বেশির ভাগ মানুষের কাছে অচেনা ছিল। এমনকি ৯০ শতাংশের বেশি আক্রান্ত আগে এই অসুখের নামই শোনেননি। 

আদতে সিওপিডিকে ‘স্মোকার্স ডিজিজ’ বলা হলেও অজস্র মহিলা ফুসফুসের এই ক্রনিক অসুখে আক্রান্ত যাঁরা জীবনে ধূমপান করেননি। এঁদের ফুসফুসের অসুখের মূলে আছে রান্নাঘরের ধোঁয়া। অথচ একটু সতর্ক হলেই অসুখটা এড়িয়ে চলা খুব কঠিন নয়। মূলত ৩৫–৪০ বছর বয়সে এই অসুখের সূত্রপাত হয়। বিশেষ করে টানা ১০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে যাঁরা ধূমপান করছেন এবং কাজের কারণে বদ্ধ জায়গায় ধোয়ার মধ্যে থাকছেন তাঁদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের দেশে সিওপিডি রোগীর সংখ্যা এতটাই বাড়ছে যে, কোভিড অতিমারির মতো সিওপিডির মহামারি শুরু হতে চলেছে। অথচ রোগটা সম্পর্কে সচেতনতা নেই বললেই চলে। একটা সিগারেটে টান দিলেই যে সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুসের এই অসুখ আক্রমণ হানবে ব্যাপারটা সে রকম নয়। নাগাড়ে ধূমপান করতে থাকলে ধীরে ধীরে এই অসুখের সূত্রপাত হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দীর্ঘ দিন ধরেই অসুখটি সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পালমোনলজিস্ট জানালেন, “এ বারের সিওপিডি দিবসের থিম ‘ওয়েল উইথ সিওপিডি এভরিবডি এভরি হোয়্যার’। আসলে এই অসুখের মূল সমস্যা বারে বারে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া। শুরুতে কিছু সাবধানতা মেনে চললে বার বার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আটকে দেওয়া যায়। রোগের শুরুতে যখন অল্প কাশি শুরু হয় সঙ্গে সঙ্গে ধূমপান ছেড়ে এবং ধোঁয়া ধুলো এড়িয়ে  চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে চললে রোগের বাড়বাড়ন্ত কিছুটা আটকে দেওয়া যায়।”

এই রোগের শুরুতে সকালে ঘুম থেকে উঠেই কাশি শুরু হয়। এর মূল কারণ সিগারেটের ধোঁয়ায় ‘ইনফ্ল্যামেশন অফ দ্য এয়ারওয়েজ’ অর্থাৎ শ্বাসনালী ফুলে উঠে শ্বাস টানার পথ প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। এই কারণেই শ্বাস নিতে অসুবিধে হয়। এই অবস্থার পরিবর্তন না করতে পারলে রোগ এড়ানো অসম্ভব। 

শহরাঞ্চলে বায়ুদূষণের মূলে গাড়ির ধোঁয়া ও কলকারখানার ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারেও সরকারি স্তরে ব্যবস্থা না নিলে শ্বাসনালী-সহ ফুসফুসের অসুখ প্রতিরোধ করা মুশকিল। পালমোনলজিস্ট জানালেন, “কোভিডের ফলে লকডাউন হওয়ায় এ বারের পরিবেশ তুলনামূলক ভাবে অনেক পরিচ্ছন্ন। পরিবেশ সচেতনতা গড়ে ওঠার পাশাপাশি ধূমপানকে বিদায় জানালে সিওপিডি-র মতো অসুখ এড়িয়ে চলা খুব কঠিন কাজ নয়।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Smoking, #Health Tips

আরো দেখুন