কৃষকদের জন্য আমরা যা করেছি কেউ করেনি: মোদীকে আক্রমণ মমতার
কৃষক কল্যাণ ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘জবাব’ দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সোমবার বারাণসী থেকে নাম না করে মমতাকে কটাক্ষ করেছিলেন মোদী। কেন্দ্রের ‘পিএমকিসান’ প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে চালু করতে না দেওয়া নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। মঙ্গলবার নবান্ন থেকে পাল্টা মমতা বললেন, আমরা কৃষকদের (Farmer) জন্য যা করেছি, কেউ করেনি।
সোমবার নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্র বারাণসীতে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী (Narendra M odi) বলেছিলেন, “একটি রাজ্য পিএম-কিসান চালুই করেনি। কারণ, কৃষকরা হাতে টাকা পেয়ে গেলে মোদীর জয়জয়কার হবে।” এর পাল্টা হিসেবে আজ মমতা প্রশ্ন তোলেন, “রাজ্যের নিজস্ব প্রকল্প রয়েছে। তা হলে আমরা কেন্দ্রের প্রকল্প নেব কেন?”
‘প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি’ (PM Kishan)) প্রকল্পে বছরে তিন কিস্তিতে কৃষকদের মোট ৬ হাজার টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বছর দুয়েক ধরেই এই টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রের এই প্রকল্পটি বাংলায় চালু হয়নি। কৃষকদের নামের তালিকা রাজ্য সরকার যাচাই করে না পাঠানোয় বাংলার ৭০ লক্ষ কৃষক ওই টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপি-র অভিযোগ করছে। রাজ্য সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা দাবি তুলছে যে, কৃষকদের প্রদেয় টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না দিয়ে টাকা রাজ্য সরকারকে দেওয়া হোক। রাজ্য ওই টাকা বণ্টন করবে। কেন্দ্র সে শর্তে রাজি হয়নি।
বারাণসী থেকে সোমবার মোদীর আক্রমণ ছিল সেই ইস্যুতেই। যার পাল্টা হিসেবে মঙ্গলবার মমতা মুখ খুললেন। তিনি বললেন, “বছরে দুই কিস্তিতে ৫ হাজার টাকা আমরা দিই। কৃষকদের জমির খাজনা আমরা মকুব করে দিয়েছি। ধান দিন, চেক নিন, আমরা চালু করেছি।”
কেন্দ্রের প্রকল্পের সঙ্গে রাজ্যের প্রকল্পের তুলনা টেনে মমতা দাবি করেন, কেন্দ্র যে ৬ হাজার টাকা দেন, তা শুধুমাত্র যাঁদের ২ একর জমি আছে তাঁদের জন্য। আর রাজ্যের প্রকল্পের সুবিধা মাত্র ১ কাঠা জমি থাকলেওমেলে। ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে কোনও কৃষকের মৃত্যু হলে রাজ্য সরকার যে কৃষকবন্ধু প্রকল্পে তাঁর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা দেয়, সে কথাও মুখ্যমন্ত্রী এ দিন মনে করিয়ে দিয়েছেন।
লকডাউনের (Lockdown) ফলে অনেকে সময়মতো জমির খাজনা দিতে পারেনি। তাঁদের কথা ভেবে খাজনা দেওয়ার সময়সীমা আরও ৬ মাস বাড়ানোর কথাও মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। এ ছাড়া শর্ত অনুযায়ী, পূর্বের খাজনা বর্তমানে দিলে ৬.২৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হত। সে প্রসঙ্গে আজ মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, খাজনার উপর কোনও সুদ দিতে হবে না। খাজনা জমা দেওয়ার সময়সীমাও ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত বাড়ানো হল।