প্রতীক্ষার অবসান, খুলে গেল মাঝেরহাট সেতু
দু’বছর তিন মাস পর ফের নতুন রূপে চালু হল ‘জয় হিন্দ’ সেতু তথা কলকাতা-বেহালা সংযোগকারী মাঝেরহাট ব্রিজ (Majahrhat Bridge)। পূর্ব ঘোষণামতো বৃহস্পতিবার বিকেলে তার উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নেতাজিকে শ্রদ্ধাপ্রদর্শনে তাঁর বিখ্যাত স্লোগানের নামেই এই সেতুর নামকরণ করার কথা আবার স্মরণ করিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ”নেতাজির পদতলে এভাবেই শ্রদ্ধা জানালাম।” এই সেতু তৈরিতে রেলের হাজারও অসহযোগিতার অভিযোগে উদ্বোধনী ভাষণেও রেলকে বিঁধলেন তিনি। প্রশ্ন তুললেন, যদি সেতু তৈরি রেলেরই পুরো দায়িত্ব, তাহলে কেন রাজ্যের থেকে ৩৪ হাজার কোটি কোটা নেওয়া হল? সেই টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিতেও সোচ্চার হলেন মুখ্যমন্ত্রী।
৪ সেপ্টেম্বরে, ২০১৮। বিকেলের দিকে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে মাঝেরহাট ব্রিজ। মূল কলকাতা থেকে বেহালা-জোকা এলাকার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চরম সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা। মাঝেরহাট ব্রিজের দৌলতে যে দূরত্ব খুব কম সময়ে পৌঁছনো যেত, সেটাই অনেকটা সময় ধরে যাতায়াত করতে বাধ্য হন তাঁরা। অবশেষে এই যন্ত্রণার অবসান। বৃহস্পতিবার একেবারে নতুন রূপে, নতুন নামে খুলে গেল নবনির্মিত ব্রিজটি। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর মতো ঝুলন্ত সেতুর ধাঁচে তৈরি হয়েছে ‘জয় হিন্দ’ সেতুটি। তবে এই নির্মাণ খুব সহজে হয়নি। রেলের অংশে সেতুটি নির্মিত হওয়ার কারণে কাজ এগোতে রাজ্যের সঙ্গে বেশ কয়েকবার সংঘাত তৈরি হয়েছে। কাজে বিলম্বের জন্য একে অন্যের উপর দোষারোপ করেছে দু’পক্ষই। শেষমেশ গত সপ্তাহে সেতু চালু করতে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেয় রেল।
এদিন উদ্বোধনী ভাষণেও রেলকে সেসব নিয়ে বিঁধতে ছাড়লেন না মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ”আমরা সব কাজ করব আর রেল কৃতিৃত্ব নেওয়ার চেষ্টা করবে? তা কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না। কেন তাহলে এতদিন কাজে ছিল না রেল?” এমনকী আর্থিক বিষয় নিয়েও রেলের প্রতি তীব্র ক্ষোভ উগরে দিলেন। সেতু নির্মাণে রাজ্যের অবদান এবং আর্থিক খরচের কথা উল্লেখ করে এই কাজের জন্য রাজ্যের তরফে যে অর্থ নিয়েছে রেল, তা ফেরত দিয়ে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
পাশাপাশি, সাধারণ মানুষের কাছে ব্রিজটির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, নিয়ম মেনে যাতায়াত, হেলমেটহীন অবস্থায় বাইক না চালানো-সহ একাধিক আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে যোগাযোগের জন্য উড়ালপুল বা সেতু কত উপকারী, তা জানিয়ে যে ক’টি ব্রিজ তৈরির কাজ চলছে কলকাতায়, সেসব আরেকবার উল্লেখ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।