খুনের মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ বনগাঁয়
খুনের মামলায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতাকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে বুধবার বনগাঁ আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের (Trinamool) নেতা-কর্মীরা। মৃতের পরিবারের সদস্যরাও সেখানে ছিলেন। পরিবারের দাবি, প্রভাব খাটিয়ে এই মামলার নথিপত্র আদালত থেকে গায়েব করেছিল অভিযুক্ত। ঘটনাটি যে সময়ের, তখন অভিযুক্ত দেবদাস মণ্ডল (Debdas Mondal) ছিলেন সিপিএমে। পরে দলবদল করে যোগ দেন তৃণমূলে। গত লোকসভা ভোটের আগে ফের জার্সি বদল করে তিনি এখন বিজেপিতে। বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে মামলা শুরু করার পাশাপাশি অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। অভিযুক্ত বিজেপি (BJP) নেতা শাসকদলের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৯ সালের ৪ নভেম্বর তৃণমূল কর্মী সূর্যশেখর রায়চৌধুরী খুন হন। ওই সময় মৃতের পরিবার বনগাঁ থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করে। তাতে তৎকালীন সিপিএম (CPM) নেতা দেবদাস মণ্ডলের নাম ছিল। দেবদাসবাবু বাম জমানার শেষ দিকে তৃণমূলে যোগ দেন। তিনি বর্তমানে বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি। এদিকে, বনগাঁ মহকুমা আদালত থেকে এই খুনের মামলার বেশ কিছু কাগজপত্র ‘মিসিং’ হয়ে যায়। যা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। মৃতের পরিবার দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করার পাশাপাশি দেবদাসবাবুকে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। এরপর নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করা হয়। এদিন বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দেওয়ার কথা ছিল সেশন কোর্টের। কিন্তু এক অভিযুক্ত আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় সেই নির্দেশ দেননি বিচারক। এদিন দুপুরে বনগাঁ পুরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীরা মৃতের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
তাঁরা আদালত চত্বরেও দীর্ঘ সময় বিক্ষোভ দেখান। প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুনের মাধ্যমে দেবদাস মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে কঠোর সাজার দাবি জানানো হয়। মৃতের ভাই সৌমেন্দ্র রায়চৌধুরী বলেন, দেবদাস মণ্ডল ও তার দলবল দাদাকে নৃশংসভাবে খুন করেছিল। ২১ বছর আগের সেই ঘটনায় এখনও অভিযুক্তদের সাজা হয়নি। পরে শুনেছিলাম আদালত থেকে নাকি সব নথি হারিয়ে গিয়েছে। ফের নতুন করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা অভিযুক্তদের কঠোর সাজা চাই। এ প্রসঙ্গে দেবদাস মণ্ডল বলেন, আদালতে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করব না। তবে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এর পিছনে তৃণমূলের মদত রয়েছে। ওদের পায়ের তলায় মাটি নেই। এইসব করেও ওরা হার আটকাতে পারবে না। বনগাঁ আদালতের সরকারি আইনজীবী সমীর দাস বলেন, এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথি আদালত থেকে মিসিং হয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। এর পিছনে অসাধু চক্রের হাত ছিল। নথিপত্র তৈরির পর নতুন করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা দ্রুত শুনানির জন্য আদালতে দরবার করেছি।