আবার কৃষক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে মোদি সরকার
অনড় দু’পক্ষই। কৃষকদের দাবি, অবিলম্বে আইন বাতিল করা হোক। সরকারের বক্তব্য, আইনে কোথায় আপত্তি বলুন। এই পরিস্থিতিতেই আজ বৃহস্পতিবার ফের মুখোমুখি বসছেন আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং মোদি সরকার। এই নিয়ে চতুর্থ দফার বৈঠকে বসতে চলেছেন উভয়পক্ষ। কৃষক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকের আগে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)।
তবে শুধু কৃষি আইনই নয়, সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুৎ সংশোধন বিল খারিজের দাবিও। কোনওভাবেই এই বিল আনা যাবে না বলে সরব হয়েছেন কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। গত মঙ্গলবার কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে এই বিষয়ে আভাসও দেওয়া হয়েছে। এবার তা নিয়েও চাপ বাড়ানো হবে। কৃষক সংগঠনের অভিযোগ, এই বিল সংশোধন হয়ে আইন হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার পুরোটাই পুঁজিবাদীদের হাতে চলে যাবে। আরও বিপদে পড়বেন কৃষকরা। তাই এই বিলও প্রত্যাহার করতে হবে।
কৃষি আইনের (Farmers Law) ক্ষেত্রে তাঁদের বক্তব্য, নিশ্চিত করতে হবে এমএসপিও (ন্যূনতম সহায়ক মূল্য)। হয় নতুন আইনের কোনও ধারায় তা যুক্ত হোক, আর তা সম্ভব না হলে নতুন করে আনা হোক এমএসপি সংক্রান্ত আইন। মোটের উপর কৃষকের উৎপাদন খরচের বেশি অর্থ নিশ্চিত করতে সরকারি সিলমোহর চান কৃষকরা। যদিও সরকার কৃষকদের চাপে আইন বাতিল করতে রাজি নয়। প্রয়োজনে কিছু সংশোধন হতে পারে মাত্র। কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমারের বক্তব্য, তিনটি আইনই কৃষকদের ভালোর জন্য। তাও যদি আইনের কোনও অংশ নিয়ে কৃষকদের মনে আশঙ্কা থাকে, তা নিয়ে আলোচনা করতে সরকারের দরজা সব সময় খোলা। কিন্তু আইন বাতিলের প্রশ্নই নেই।
অন্যদিকে, আন্দোলনরত কৃষক সংগঠনের পাল্টা মন্তব্য, যে আইনের পুরোটাই খারাপ, তার আবার সংশোধন কী? আন্দোলনরত সংগঠনের অন্যতম অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক তথা সিপিএমের (CPM) প্রাক্তন এমপি হান্নান মোল্লা বলেন, ‘এই তিনটি আইনই আসলে ধাপ্পাবাজি। কৃষকদের উপার্জন বৃদ্ধির নামে জুমলা। তাই এর কোনও সংশোধন নয়, পুরোটাই বাতিল করতে হবে। নইলে আন্দোলন চলবে।’ প্রয়োজনে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে আইন বাতিলের দাবিও করেছে সংগঠনের একাংশ। ওদিকে, এই ইস্যুকে সমর্থন করে আগামীদিনে মোটর ট্রান্সপোর্ট সংগঠন ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে। সরকার কৃষকদের দাবি না মানলে আগামী ৮ ডিসেম্বর দেশজুড়ে এই ধর্মঘট হতে পারে। ফলে সব মিলিয়ে প্রবল চাপে মোদি সরকার। কৃষক সংগঠনের সঙ্গে চতুর্থ দফার আলোচনায় বসার আগে বুধবার ফের নিজেদের মধ্যে স্ট্র্যাটেজি বৈঠক সারেন অমিত শাহ, পীযূষ গোয়েল এবং নরেন্দ্র সিং তোমার। এরই মধ্যে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে রাহুল গান্ধী বলেছেন, কৃষকদের ধোঁকা দেওয়া বন্ধ করো। সুর চড়িয়ে এআইসিসি মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালার দাবি, খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কৃষকদের সঙ্গে নিঃশর্ত আলোচনায় বসতে হবে।