পূর্ব মেদিনীপুরে দুয়ার সরকার অভিযানে দু’দিনে জমা পড়ল ৩৫ হাজার আবেদন
মাত্র দু’দিনে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৩৫হাজার মানুষ ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar) কর্মসূচির ক্যাম্পে বিভিন্ন পরিষেবা পাওয়ার আবেদন জানালেন। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যসাথী থেকে কাস্ট সার্টিফিকেট সহ বিভিন্ন স্কিমের পরিষেবা দেওয়ার কাজ চলছে। বেশ কিছু জায়গায় আবেদন জানানোর একদিন পরেই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড (Swasthyasathi Card) তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে ১৫থেকে ২৪ডিসেম্বর দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্যাম্প চলাকালীন বেশিরভাগ মানুষের হাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দেওয়ার তোড়জোড় চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন।
দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি স্কিমের জন্য জেলায় একজন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। এর বাইরে গোটা কর্মসূচি নির্বিঘ্নে শেষ করতে ও নজরদারি চালানোর লক্ষ্যে প্রতিটি ব্লক, পুরসভার জন্য একজন করে মহকুমা শাসক ও ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে নিযুক্ত করেছেন জেলাশাসক। এই মুহূর্তে গোটা প্রশাসনের ফোকাস শুধুমাত্র দুয়ারে সরকার কর্মসূচির উপর। কতজন আবেদন করলেন, তার আপডেট প্রতি ঘণ্টায় জেলা হেড কোয়ার্টার থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। আগামী দু’মাসের জন্য বাতিল করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত সরকারি অফিসার ও কর্মীদের ছুটিও।
জেলায় ‘দুয়ারে সরকার’ প্রোগ্রাম কেমন চলছে তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে নবান্নের (Nabanna) প্রতিনিধি হিসেবে বুধবার জেলায় এসেছিলেন টেকনিক্যাল এডুকেশন, ট্রেনিং অ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান সচিব অনুপ আগরওয়াল। ওইদিন সন্ধ্যায় বিডিও, মহকুমা শাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবার জন্য স্বাস্থ্যসাথী স্কিম ঘোষণা করেছেন। এতে পরিবারপিছু পাঁচ লক্ষ টাকা স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা রয়েছে। ওই ঘোষণার পর স্বাস্থ্যসাথীর স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন পড়ছে সবচেয়ে বেশি। প্রথম সপ্তাহের লক্ষাধিক আবেদন পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেইমতো প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন। ১ ডিসেম্বর আবেদন করা বেশ কয়েকজনের হাতে ২ডিসেম্বর কাস্ট সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডও পেয়েছেন বেশ কয়েকজন। স্বাস্থ্য বিমার কার্ডের জন্য হাজার হাজার আবেদন পড়ছে। বৃহস্পতিবার এনিয়ে জেলাশাসক বিভু গোয়েল জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডলের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বুধবার পাঁশকুড়া-১ ব্লকের রঘুনাথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত আমডুবি গ্রামে ‘দুয়ারে সরকার’-এর ক্যাম্প বসেছিল। নবান্নের প্রতিনিধি ও জেলাশাসক ওই ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। একদিনে সেখানে ১৭৫০জন বিভিন্ন সরকার স্কিমের পরিষেবার জন্য আবেদন করেছেন। শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসাথীর জন্য আবেদন করেছেন ৪৫০জন। প্রতিদিন এক একটি ক্যাম্পে এক থেকে দু’হাজার পর্যন্ত আবেদন জমা পড়ছে। সেইসব আবেদন স্ক্রুটিনির কাজ চলছে যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। মোট চারটি রাউন্ডে ক্যাম্প করা হবে।
জেলাশাসক বলেন, শুরুর দিন থেকে আমাদের জেলায় ওই কর্মসূচিতে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে। প্রতি ঘণ্টায় জমা পড়া আবেদনের আপডেট সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমরা বেশ কয়েকজনকে স্বাস্থ্যসাথী ও কাস্ট সার্টিফিকেট ইস্যু করে দিয়েছি। ইস্যু করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় রাউন্ড চলাকালীন ক্যাম্পে কার্ড দেওয়ার কাজে আরও জোর আসবে।