রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

স্বাস্থ্য সাথীর ফর্ম বিলি করছে বিজেপি কর্মীরাই, কটাক্ষ তৃণমূলের

December 5, 2020 | 2 min read

হাওড়া ময়দানের অক্ষয় শিক্ষায়তন স্কুলের সামনে বিজেপি কর্মীদের স্বাস্থ্য সাথীর ক্যাম্প

রাজ্য সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare Sarkar) কর্মসূচি আর তার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swasthya Sathi Card) করানোর ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সাড়া এবং প্রশাসনের তৎপরতা দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রীও। যদিও বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি রাজ্য সরকারের এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। অথচ এই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ল বিরোধীরাও। শুক্রবার হাওড়া ময়দানে (Howrah Maidan) স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের (Swasthya Sathi) ফর্ম ফিলাপ করলেন বিজেপি (BJP) কর্মীরা। এর আগে কংগ্রেসের (Congress) তরফেও এমন দেখা গিয়েছিল হরিহরপাড়ায়।

শুক্রবার হাওড়া ময়দান ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য ক্যাম্পে রাজ্য সরকারের প্রকল্প ‘স্বাস্থ্যসাথী’র জন্য দেওয়া ফর্ম অনেককেই ফিলাপ করে দিলেন বিজেপি কর্মীরা। যে বিজেপি আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকারকে প্রতিনিয়ত আক্রমণ শানায়, তাঁরা কেন স্বাস্থ্যসাথীর জন্য উদ্যোগী হচ্ছেন? হাওড়ার বিজেপি সভাপতি শুভজিৎ সাহা সাহায্য করার কথা অস্বীকার করেছেন। বরং তাঁর দাবি, সমস্ত তথ্য নথিভূক্ত রাখা হচ্ছে, ক’জন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা পেল, তা সরকারকে জবাব দিতে হবে। মন্ত্রী অরূপ রায় (Arup Roy) অবশ্য বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) এই প্রকল্প ঐতিহাসিক। মুখে বিরোধিতা করা সহজ, কিন্তু পরিষেবা পেতে সবাই চায়। সবুজসাথী প্রকল্পেরও বিরোধিতা করে সেই সাইকেলে চড়েই মিছিল করছে।’

উল্লেখ্য, কলকাতা থেকে কাটোয়া, কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার- সারা পশ্চিমবঙ্গে জুড়েই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করানোর বিপুল চাহিদা। ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে শুরু হয়ে গেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। আর প্রথম দিনই প্রশাসনিক ক্যাম্পগুলিতে জমা পড়েছে সবক’টি প্রকল্প মিলিয়ে মোট ২ লক্ষেরও বেশি আবেদন। অন্য সব প্রকল্পকে ছাপিয়ে প্রথম ইনিংসেই ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছে স্বাস্থ্যসাথী। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত শুধু এই প্রকল্পের জন্যই জমা পড়েছে ১,৩৮,৬০৭টি আবেদনপত্র। স্বাস্থ্যসাথী ‘সকলের জন্য’ হয়ে ওঠায় লাইনে চোখে পড়েছে বহু সচ্ছল পরিবারের মানুষকেও। পরিবারের কর্ত্রীর নামেই কার্ডটি দেওয়া হবে বলে ভিড় বেশি ছিল মহিলাদের। শুধু স্বাস্থ্যসাথীর জন্য এই ডিসেম্বর মাসের ঠান্ডায় মানুষ লাইন দিয়েছেন ভোর চারটে থেকে!

‘দুয়ারে সরকার’ শুধু তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত কর্মসূচিই নয়, এর রূপরেখা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করেছেন। মোট চার দফায় কোন কোন সময়ে ক্যাম্প বসবে, টুইটারে তা-ও রাজ্যবাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। নবান্নে তিনি বলেছেন, ‘ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। মানুষ আসছেন, আবেদন করছেন। আমরা যতটা সম্ভব তা সমাধান করার চেষ্টা করব।’

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে স্বাস্থ্যসাথীর সাফল্য মমতার জন্য ইভিএমে মাস্টারস্ট্রোক হয়ে উঠতে পারে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প যে রাজ্য রাজনীতিতে বিরোধীদের পালের হাওয়া বেশ খানিকটা কাড়তে চলেছে, ‘দুয়ারে সরকার’-এর পয়লা দিনের শিবিরগুলিতেই মানুষের ঢল সেই ইঙ্গিত দিয়েছে। সব মিলিয়ে, ২০২১-এর রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের মুখে ‘সকলের’ জন্য স্বাস্থ্যসাথী যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারে, তার ইঙ্গিত পেয়েই কি বিরোধীরাও সেই প্রকল্পের মাধ্যমেও রাজনৈতিক জমি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Swasthya Sathi, #Duare Sarkar, #Mamata Banerjee, #bjp, #tmc

আরো দেখুন