চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বাড়ার সুখবর দিলেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক
চা শ্রমিকদের(Tea Garden Workers) দৈনিক মজুরি (Daily wages) ফের বাড়ছে। আর এক-দুই মাসের মধ্যেই তা হচ্ছে। বিধানসভা ভোটের(Bengal Assembly Elections) প্রস্তুতি নিয়ে শুক্রবার আলিপুরদুয়ার-১(Alipurduar) ব্লকের পাতলাখাওয়া পঞ্চায়েত কার্যালয় সংলগ্ন মাঠে তৃণমূল কংগ্রেসের জনসভা ছিল। এদিন সেই জনসভার মঞ্চ থেকে রাজ্য সরকারের চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক(Moloy Ghatak)। চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির কথা বলে এদিন জনসভায় শ্রমমন্ত্রী আগাগোড়া বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। করোনা (COVID19)মোকাবিলা নিয়ে বিজেপি নেতাদের কাঠগড়ায় তোলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বাম জমানায় চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ছিল ৬৭ টাকা ৫০ পয়সা। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর গত ন’বছর চা শ্রমিকদের সেই মজুরি বাড়তে বাড়তে বর্তমানে ১৭৬ টাকা হয়েছে। এদিন ভিড়ে ঠাসা জনসভার মঞ্চ থেকে শ্রমমন্ত্রী মলয়বাবু বলেন, আমরা সরকারে আসার পর চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি এখন পর্যন্ত ১৭৬ টাকা করা হয়েছে। রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর দুই- এক মাসের মধ্যে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি আরও বৃদ্ধি করা হবে।
এরপরেই বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে শ্রমমন্ত্রী মলয়বাবু বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ডুয়ার্সে একটি গোষ্ঠীর বন্ধ সাতটি চা বাগান অধিগ্রহণ করার কথা বলেছিল। কিন্তু কোনও বাগান কেন্দ্রীয় সরকার খোলেনি। ওই গ্রুপের বন্ধ বাগানের কর্মী ও শ্রমিকদের মাইনে দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। বাগান না খুলে তারা দায় এড়িয়ে গিয়েছে। ডুয়ার্সে ওই গ্রুপের বাগানগুলি আমরা খুলেছি। চা শ্রমিকদের ঘরগুলি থাকার মতো নয়। আমাদের সরকার শ্রমিকদের থাকার ঘর তৈরি করে দিচ্ছে। চা সুন্দরী প্রকল্পে ৩৬০০ ঘর তৈরির জন্য ২০১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। চা শ্রমিকদের নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভাঁওতাবাজির জবাব দিতে হবে ২০২১ সালের ভোটে।
বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে এদিন পাতলাখাওয়া পঞ্চায়েত কার্যালয় সংলগ্ন মাঠে শুধুমাত্র আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের নিয়েই জনসভা ছিল। কিন্তু তারপরেও জনসভায় এভাবে যে হাজার হাজার মানুষের ভিড় উপচে পড়বে, তা আগে থেকে বুঝতে পারেননি শাসক দলের জেলা নেতারা। ফলে জনসভায় তৃণমূল নেতৃত্বের মুখে চওড়া হাসি দেখা গিয়েছে।
জনসভার এই ভিড় ও উচ্ছ্বাস দেখেই শ্রমমন্ত্রী মলয়বাবু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করে বলেন, যিনি ১০ লাখ টাকার জ্যাকেট পড়েন, তিনি গরিবের কথা কী করে ভাবতে পারেন। আসলে ভারতের সবচেয়ে ভোগী প্রধানমন্ত্রী তিনি। দিলীপ ঘোষ হঠাৎ করেই নেতা হয়ে গিয়েছেন।
এদিন জনসভায় দলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী, আলিপুরদুয়ার-১ ব্লক সভাপতি মনোরঞ্জন দে সহ অন্যান্য নেতা ভাষণ দেন। উপস্থিত ছিলেন দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি মোহন শর্মা ও বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী সহ দলের জেলা কমিটির সমস্ত স্তরের নেতারা।