‘জিতবে বাংলা’ কর্মীদের চিঠি দিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক মমতার
দলের সাংগঠনিক বৈঠক থেকে শুরু করে প্রকাশ্য জনসভা পর্যন্ত তৃণমূল নেত্রী বরাবরই বলে থাকেন, কর্মীরাই দলের সম্পদ। দলের জন্য নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করা সেই কর্মীদের চিঠি লিখে কুর্নিশ জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তবে দলে থেকেও দল বিরোধী কাজ করা কর্মীদের তিনি যে পছন্দ করেন না, সেই মনোভাবও স্পষ্ট করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। দলের সাংগঠনিক মিটিংয়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চার জন ব্লক সভাপতিকে বদল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনা ও উম-পুনের জোড়াফলার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে বাংলা। এই অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দৃপ্তকন্ঠে জানিয়েছেন, এই লড়াইয়ে জিতবে বাংলাই। এরইমধ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। ‘জিতবে বাংলা’ লেটারহেডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাক্ষরিত চিঠি পৌঁছচ্ছে কর্মীদের কাছে। চিঠিতে তৃণমূল নেত্রী লিখেছেন, ‘দলের জন্য আপনি যা করেছেন তাকে স্বীকৃতি দিতে এই চিঠি লিখছি। আপনার মতো কর্মীরাই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি এবং আপনারা এই দলের মেরুদন্ড। আমি নিশ্চিত যে, ভবিষ্যতেও পার্টি এভাবেই আপনার একনিষ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা পেতে থাকবে।’ কাশীপুর-বেলগাছিয়া, মানিকতলা, এন্টালি সহ একাধিক বিধানসভার কর্মীর কাছে এই চিঠি পৌঁছেছে। চিঠিতে মমতা বন্দোপাধ্যায় এটাও উল্লেখ করেছেন, আগামীদিনে তৃণমূলস্তরীয় আরও অনেক কর্মীকে চিঠি লিখবেন। কর্মীদের কাছ থেকে তৃণমূল নেত্রী প্রত্যাশা করেন, এক সমৃদ্ধ বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তাঁদের নিরন্তর সমর্থন ও সহযোগিতা পাবেন। করোনা আবহের মধ্যেই রাজ্যে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব পর্ব ইতিমধ্যে মিটেছে। কর্মীদের পাঠানো চিঠিতে পরিবারবর্গকে বিজয়ার প্রীতি, শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেছেন। একসঙ্গে লড়াইয়ের বার্তা দিয়ে তৃণমূল নেত্রী লিখেছেন, ‘একতাই আমাদের শক্তি। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমরা জয়ী হব এবং জিতবে বাংলা।’
দলনেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য চিঠিতে কর্মীদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) নম্বরও (৯৭৩৮০-৯৭৩৮০) দেওয়া হয়েছে। দলের সুপ্রিমোর কাছ থেকেই চিঠি পেয়ে আবেগতাড়িত অনেক তৃণমূল কর্মী। কাশীপুর-বেলগাছিয়ার বাসিন্দা বাবু মান্না বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দল করি। ফলে দলনেত্রীর কাছ থেকে একটা চিঠি বাড়তি উৎসাহ জুগিয়েছে দলের কাজ করতে। মানুষের সেবায় ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে শামিল হওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছি একটা চিঠি থেকে।’ তবে ভালো কাজ করলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মীকে যেমন স্বীকৃতি দেন, তেমনই দল বিরোধী কাজকে তিনি বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেন না। সেটা স্পষ্ট হয়েছে শুক্রবার দলের গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক মিটিংয়ে। বিধানসভা ভোটের আগে এই বৈঠকে তৃণমূল নেত্রী বার্তা দিয়েছেন, লুঠেরাদের দালালি করলে দল থেকে চলে যান। ঘটনাচক্রে দেখা গিয়েছে, শনিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একাধিক ব্লক সভাপতির কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে দল। নন্দীগ্রাম -১ ও ভগবানপুর-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতিকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে কাঁথি-১ ও ২ ব্লকের সভাপতিকে। এর মাধ্যমে শীতের শুরুতে ভোটের উত্তাপ শুরু হতেই তৃণমূল বুঝিয়ে দিয়েছে, দলে থাকতে গেলে দলটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। উপদলীয় কাজকর্ম চলবে না।