আজব আবেদন! দ্বিতীয় বিয়ের জন্য রূপশ্রীর আর্জি
দ্বিতীয়বার বিয়ের জন্য রূপশ্রী প্রকল্পের অনুদান চেয়ে আবেদন জমা পড়ছে ‘দুয়ারে সরকার’ (Duare sarkar) ক্যাম্পে। এছাড়া ১৮ বছরের আগেই মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্যও কিছু আবেদন এসেছে। সম্প্রতি ক্যাম্পে এরকম ১৩টি আবেদন খারিজ করে দিয়েছে প্রশাসন। নিষ্পত্তি করা হয়েছে রূপশ্রী প্রকল্পের ১২০টি বৈধ আবেদন। বিয়ের মুখে ক্যাম্পে গিয়ে আবেদন করে রূপশ্রীর টাকা পাচ্ছেন বেশ কয়েকজন। ভগবানপুর-১ ব্লকের বিভীষণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৫ডিসেম্বর দুয়ারে সরকার ক্যাম্প ছিল। ওই গ্রামের দু’জন কিশোরীর বিয়ে ১০ ডিসেম্বর। রূপশ্রী প্রকল্পে আবেদন করে দু’জনের অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার করে টাকা ইতিমধ্যেই ঢুকে গিয়েছে।
রূপশ্রী প্রকল্পে (Rupashree Scheme) আবেদন করার পর অ্যাকাউন্টে টাকা না ঢুকলে এতদিন জানার কোনও সুযোগ ছিল না। কিন্তু, ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে রূপশ্রী প্রকল্পে আবেদনের পরও টাকা না ঢুকলে সেটা জানার সুযোগ তৈরি হয়েছে। ১ডিসেম্বর থেকে ক্যাম্প শুরু হতেই বিভিন্ন জায়গায় কন্যাশ্রীর পাশাপাশি রূপশ্রী নিয়েও অনেক আবেদন জমা পড়ছে। অনেকেই অনুদানের জন্য আবেদন জমা করছেন। যেমন, নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে ২৬জন রূপশ্রীর অনুদান চেয়ে আবেদন করেছে। আবার কেউ কেউ আবেদনের পরও টাকা না পেয়ে অভিযোগ জানাচ্ছেন। গত এক সপ্তাহে এরকম ১২৭টি আবেদন জমা পড়েছে বলে জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক পূর্ণেন্দু পৌরাণিক জানিয়েছেন। তারমধ্যে ১২০টি আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। একইসঙ্গে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে ১৩টি আবেদন। বাতিল আবেদন খতিয়ে দেখা গিয়েছে, সেগুলো রূপশ্রী স্কিমের আওতায় পড়ছে না। যেমন, দ্বিতীয়বার বিয়ের জন্য বেশ কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে। কিছুক্ষেত্রে পাত্র ও পাত্রীর বয়স বিয়ের উপযুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও রূপশ্রীর আবেদন করা হয়েছে। চণ্ডীপুর ব্লকে এরকম তিনটি, ভগবানপুর-২ব্লকে দু’টি, দেশপ্রাণ ব্লকে একটি, পটাশপুর-২ব্লকে দু’টি রূপশ্রীর আবেদন বাতিল হয়েছে। রূপশ্রী ও কন্যাশ্রী স্কিমে আবেদন দ্রুত খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা সমাজকল্যাণ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক বিভু গোয়েল।
রূপশ্রী প্রকল্পে কারা যোগ্য, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। পাত্রপাত্রীর ন্যূনতম বয়স যথাক্রমে ১৮ ও ২১ হওয়া আবশ্যক। পারিবারিক বার্ষিক আয় দেড় লক্ষের মধ্যে হওয়া চাই। এছাড়াও পাত্রীকে অবিবাহিত হতে হবে। অর্থাৎ একবার বিয়ের পর ফের বিয়ের জন্য অনুদান মিলবে না। কিন্তু, ডিভোর্সি কিংবা স্বামী পরিত্যক্তাদের কেউ কেউ দ্বিতীয়বার বিয়ের জন্য রূপশ্রীর আবেদন করছেন। সেজন্য ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্পকে বেছে নিয়েছেন। বিয়ের ৩০থেকে ৬০দিনের মধ্যে আবেদন করার জন্য নির্দেশ থাকলেও ক্যাম্প চলাকালীন অনেকেই বিয়ের মুখেই আবেদন করে সুবিধা পাচ্ছেন। ১০ ডিসেম্বর ভগবানপুর-১ ব্লকের বিভীষণপুর গ্রামের বীরেন্দ্রনাথ বর্মনের মেয়ে মৌমিতা ও শক্তিপদ সাউয়ের মেয়ে সুস্মিতার বিয়ে। গত শনিবার ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প ছিল। সেখানে দু’জনে রূপশ্রীর জন্য আবেদন করেন। ওই দিনেই তাদের আবেদন খতিয়ে দেখে বেনিফিসিয়ারি লিস্ট রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দু’জনের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে।