অক্সফোর্ডে বলতে দেওয়া হল না মমতাকে, নেপথ্যে পিএমও?
প্রায় চার মাস আগে থেকে অক্সফোর্ড ইউনিয়নে (Oxford) বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য দেওয়ার কথা থাকলেও একেবারে শেষ মুহুর্তে এসে মাত্র। ৪৫ মিনিট আগে একটি ইমেইল পাঠিয়ে আপাতত পাতিল রাখার কথা জানিয়ে দেয় উদ্যোক্তারা। কিন্তু আন্তর্জাতিক কোনাে বিতর্ক সভা অথবা অক্সফোর্ড ইউনিয়ন এর মত ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী একটি সংস্থা শুধুমাত্র ইমেইল পাঠিয়ে অন্য দেশের একজন নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা বাতিল করার ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন। আশ্চর্যজনকভাবে মমতার বক্তব্য বাতিল করার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে ভারতে আগামী জানুয়ারি মাসে প্রজাতন্ত্র দিবস প্যারেডে সম্মান জানানাের জন্য আমন্ত্রণ জানান নরেন্দ্র মােদি (Narendra Modi)। এই ঘটনার সঙ্গে আপাতভাবে বক্তৃতা বাতিলের সরাসরি কোনাে সম্পর্ক না থাকলেও, পররাষ্ট্র নীতি এবং কূটনৈতিক অভিজ্ঞমহলের ধারণা ভারতের নরেন্দ্র মােদির প্রধান বিরােধী মুখ হিসেবে পরিচিত মমতাকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বক্তব্য রাখতে না দেওয়ার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় শাসক দল অত্যন্ত পরিকল্পনামাফিক গােটা অপারেশন চালিয়েছে।
প্রসঙ্গত অতীতে একাধিকবার অক্সফোর্ড ইউনিয়ন রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থেকেও ভারতে নরেন্দ্র মােদী জমানায় গণতন্ত্রের ধ্বংস বিষয়ে একাধিক আলােচনা সভার আয়ােজন করেছে। কিন্তু গত বছর থেকে গুজরাত বংশােদ্ভুত প্রীতি প্যাটেল বৃটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই কার্যত ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার অথবা মােদি বিরােধী যেকোনাে আলােচনা সভা বারে বারে বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও মােদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই দেশের নানা বিরােধী রাজনৈতিক দলগুলির মুখ্যমন্ত্রী অথবা প্রথম সারির নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিনিধিত্ব করতে দেওয়ার ক্ষেত্রে বারেবারে বাধা দেওয়া হয়েছে কূটনৈতিক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রভাব খাটিয়ে। ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রের মতাে বৃটেনের শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ করে অক্সফোর্ড ইউনিয়ন এর মত প্রাচীন সংস্থায় সরাসরি সরকারি প্রভাব বা রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ না থাকলেও, পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে অভিজ্ঞ একাধিক ব্যক্তির বক্তব্য, ব্যক্তিদের আলােচনা সভায় আমন্ত্রণ জানানাে হয়, তাই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রভাব সেখানে ভীষণ ভাবে কার্যকর। প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সঙ্গে গত বছরই একান্ত বৈঠক হয় গুজরাটি বংশােদ্ভূত বৃটেনের হােম মিনিস্টার প্রীতি প্যাটেলের। তাই বাঙালি মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে আন্তর্জাতিক স্তরে আটকে দেওয়ার জন্য গুজরাতি কানেকশনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউই।