আবার নিঃশুল্ক পেসমেকার পরিষেবা চালু উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে
দীর্ঘ কয়েক বছর পর শনিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ফের একজন রোগীর শরীরে পেসমেকার বসানো হল। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি শহরের ডাবগ্রামের বাসিন্দা প্রৌঢ় সঞ্জয় বর্মনের (৫২) শরীরে সিঙ্গল চেম্বার ভিভিআইআর পেসমেকার স্থাপন করা হয়েছে। নিখরচায় এই পরিষেবা এখন থেকে মেডিক্যালে পাওয়া যাবে।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের (North Bengal Medical College) সুপার ডাঃ কৌশিক সমাজদার বলেন, বছর পাঁচেক আগে লজিস্টিক সাপোর্টের অভাব ও কার্ডিওলজিস্ট খুব বেশি না থাকায় পরিষেবাটি বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। এদিন থেকে ফের এই পরিষেবা শুরু হল। এই পরিষেবার জন্য সম্পূর্ণ আলাদা ঘর, আলাদা সেটআপ রাখা আছে। ইতিমধ্যে লোকবল বাড়াতে কিছু ক্যাথলার নিয়োগ করা হয়েছে।
মেডিক্যালের কার্ডিওলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডাঃ ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল বলেন, সঞ্জয় বর্মন নামে ৫২ বছরের এক রোগী আউটডোরে দেখাতেন। তাঁর ২০০৬ সালে ইএমবিআর মাইট্রাল ভাল্ভ প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। এরপর ২০১৩ সালে ডানদিকে সিঙ্গল চেম্বার পেসমেকার (Pacemaker) বসানো হয়েছিল। ওঁকে পরীক্ষা করে আমরা দেখি, গত ছ’মাস ধরে তাতে ইনফেকশন হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছিল। তারপরেও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। এদিন অস্ত্রোপচার প্রক্রিয়াটি অনেকটা জটিল ছিল। ডান দিকের সংক্রামিত পেসমেকারটি সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর বাঁ দিকে স্থায়ী সিঙ্গল চেম্বার ভিভিআইআর পেসমেকার স্থাপন করা হয়েছে।
হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডাঃ রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, আমি এবং আমার স্ত্রী মেডিক্যালের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল ডাঃ সঙ্গীতা ভট্টাচার্য দু’জনই ব্যাক্তিগতভাবে এদিন ওটিতে ছিলাম। স্ত্রী প্রিন্সিপাল থাককালীন মেডিক্যালে ২০০৫ সালে প্রথম পেসমেকার স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তবে ওটি থেকে সংক্রমণ ছড়ানোয় পরবর্তীতে পরিষেবাটি বন্ধ করতে হয়। এদিন থেকে ফের পরিষেবা চালু করতে পেরে আমরা খুশি।
সঞ্জয়বাবুর ছেলে জয়ন্ত বর্মন বলেন, মেডিক্যালে নিঃশুল্ক এই পরিষেবা পেয়ে আমরা খুশি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সাল পর্যন্ত পাঁচজনের শরীরে পেসমেকার বসানো হয়েছিল। কার্ডিওলজি ওটি না থাকায় ইউরোলজি ওটিতেই পেসমেকার বসানোর অস্ত্রোপচার শুরু হয়েছিল। সেইজন্য অধিকাংশ রোগীর সংক্রমণ দেখা যাচ্ছিল। তবে এবারে উন্নতমানের সেটআপ সহ কার্ডিওলজি ওটির ব্যবস্থা করা হয়েছে।