৭৫ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি বিজেপির, ২ কোটি চাকরির কী হল, প্রশ্ন মানুষের
বাংলার যুব সম্প্রদায়কে কাছে টানতে ক্ষমতায় এলেই বাংলায় ৭৫ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি দিল বিজেপি (BJP)। গত ১৩ই ডিসেম্বর হেস্টিংসে বিজেপির কার্যালয়ে এই ঘোষণা করেন দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় ও সাংসদ তথা যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। তৃণমূলের শাসনকালে বাংলার বেকারত্ব নিয়ে আক্রমণ শানান তাঁরা। একইসঙ্গে ভোটে জিতলে ৭৫ লক্ষ যুবক-যুবতীর চাকরির প্রতিশ্রুতি দেন সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan)।
যদিও পালটা তৃণমূলের (Trinamool) তরফে বলা হয়েছে, বছরে দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া নরেন্দ্র মোদী ৬ বছরে কত মানুষের চাকরি দিয়েছেন, সেই হিসেব বিজেপিকে লজ্জায় ফেলবে। ভোটের আগে এসব বিজেপির ‘জুমলা’ বলেও কটাক্ষ বিরোধীদের।
সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষের প্রশ্ন, ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগে বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদী। চাকরি তো তৈরি হয়ইনি, উল্টে নোটবন্দি, জিএসটি তথা লকডাউনের প্রকোপে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।
উল্লেখ্য, সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি বা সিএমআইই জানাচ্ছে ভারতে বেকারত্বের হার ৭.৮ শতাংশে নেমেছে। ২২শে নভেম্বর যে সমীক্ষা করেছে সিএমআইই, তাতে এই তথ্য জানা গিয়েছে। সিএমআইই জানিয়েছে জুন মাসে লকডাউন ধীরে ধীরে তুলে নেওয়ার পর কিছুটা হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল। তবে ২৫শে অক্টোবরের পর থেকে আবার সেই হার নামতে শুরু করেছে। নভেম্বরের ২২ তারিখ পর্যন্ত নিয়োগের হার ছিল ৩৬.২ শতাংশ।
সিএমআইইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১.৮ কোটি মানুষকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে এই মহামারীর কারণ দেখিয়ে। বিভিন্ন ব্যবসা ও ফার্ম থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে এঁদের। এই সমীক্ষা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে। কারণ বিভিন্ন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাড়ছে কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিমাণ।
ভারতে মোট কর্মীর মধ্যে ২১ শতাংশ বেতনভোগী। অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক বা কর্মীদের তুলনায় এই সংখ্যাটা যথেষ্ট কম। বেতনভোগী কর্মীদের ওপরেই কোপ পড়েছে বেশি। খুব সহজেই এদের ছাঁটাই করা সম্ভব হচ্ছে সংস্থাগুলির পক্ষে। ফলে উদ্বেগ বাড়ছে দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধি নিয়ে। রিজার্ভ ব্যাংক জানিয়েছে গত এপ্রিল থেকে জুন মাসের ত্রৈমাসিকে ২৪ শতাংশ অর্থনীতির সংকোচন হয়েছিল। সেপ্টেম্বর মাসে আর্থিক বৃদ্ধি ৮.৬ শতাংশ কমে এসেছিল দেশের অর্থনীতি।