কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে আজ অনশন কৃষকদের
তিনটি কৃষি আইন অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে আজ, সোমবার দেশজোড়া বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কার্যত ভারত বনধের রূপ দিতে মরিয়া কৃষকেরা। দাবি আদায়ে আজ দিনভর অনশন আন্দোলন তো চলবেই। এরই পাশাপাশি রবিবার বিক্ষোভরত কৃষকরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘সোমবার দিল্লি সংলগ্ন সমস্ত সীমানা এলাকায় ধর্না-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।’ অন্যান্য রাজ্যের সীমানাতেও তা পালন করা হবে। যার অর্থ, কৃষকদের সোমবারের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আরও একবার অশান্তির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এরই মধ্যে এদিন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal) জানিয়েছেন, বিক্ষোভরত কৃষকদের সমর্থনে তিনি সোমবার সাত ঘণ্টার অনশন করবেন। আম আদমি পার্টির নেতা-কর্মী এবং সমর্থকদেরও এই ইস্যুতে অনশন করার আহ্বান জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লি সরকারের মন্ত্রী গোপাল রাই জানিয়ে দিয়েছেন, ‘সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দলের প্রধান কার্যালয়ে অনশনে বসবেন আপ বিধায়ক, কাউন্সিলার, নেতা-কর্মী, সমর্থকরা।’
রবিবার আন্দোলনরত কৃষকেরা জানিয়েছেন, ‘এটি সম্পূর্ণভাবে কৃষকদের আন্দোলন (Farmers Protest)। তা হাইজ্যাক করতে দেওয়া হবে না। দাবি না মেনে নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন এভাবেই চালিয়ে যাওয়া হবে।’ শনিবারই বিক্ষোভকারীরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রবিবার দিল্লি-জয়পুর এক্সপ্রেসওয়ে অবরুদ্ধ করে দেওয়া হবে। সেইমতোই এদিন সংশ্লিষ্ট হাইওয়েতে পৌঁছে যান হাজার হাজার কৃষক। পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং রাজস্থান থেকেও দিল্লির উদ্দেশ্যে মিছিল করতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। বন্ধ করে দেওয়া হয় দিল্লি-জয়পুর এক্সপ্রেসওয়ের দুটো দিকই। মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিসবাহিনী। নামানো হয় র্যাফ, জলকামান। তবে ১২ দিন পরে রবিবার যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে দিল্লি-নয়ডার চিল্লা সীমানা। যদিও আন্দোলনরতরা জানিয়েছেন, বিক্ষোভ আগের মতোই চলবে। একইসঙ্গে কৃষকেরা এদিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘দাবি আদায়ের শেষ অস্ত্র হিসেবে প্রয়োজনে গোলা-লাঠি পদ্ধতির ব্যবহার করবেন তাঁরা।’ এই বিশেষ পদ্ধতিতে উবু হয়ে বসার পর দুই হাঁটুর নিচ দিয়ে একটি লাঠি প্রবেশ করানো হয়। সেই লাঠির নিচ দিয়ে দুই হাত পায়ের সামনে রেখে তা বেঁধে দেওয়া হয়। কৃষকদের দাবি, যাঁর উপর এই গোলা-লাঠি পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়, তিনি কোনওমতেই আর উঠে দাঁড়াতে পারেন না। ধাক্কা দিলে গড়িয়ে পড়ে যান। অর্থাৎ, পুলিসকর্মীরা যদি গায়ের জোরে তাঁদের অবস্থান তুলতে চান, তাহলে তাঁরা একত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করবেন নিজেদের উপর। যার ফলে কিছুতেই পুলিসকর্মীদের পক্ষে অবস্থানরতদের আর তুলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না।
আজ বিভিন্ন সীমানায় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যেমন অনশন (Hunger strike) করবেন কৃষকেরা, তেমনই রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি দপ্তর ঘেরাওয়ের ডাকও দিয়েছেন তাঁরা। রাজস্থান-হরিয়ানা সীমানায় ইতিমধ্যেই ব্যারিকেড বসিয়েছে পুলিস। কৃষকদের হুঁশিয়ারি, আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি রাজ্য থেকে আরও অন্তত ৫০০টি ট্রাক্টরে আন্দোলনকারীরা সিংঘুতে আসবেন। এদিন ৯ নম্বর জাতীয় সড়কে পুলিসের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেছেন কৃষকেরা।