গোর্খাল্যান্ডের প্রতিশ্রুতি দিইনি- মমতা
গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে ফের নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।একহাত নিলেন বিজেপিকেও। জলপাইগুড়ির এবিপিসি ময়দানের জনসভা থেকে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ”আমি গোর্খাল্যান্ডের প্রতিশ্রুতি দিইনি, তাই ওখানে জিতিনি। পাহাড়ের সমস্যা সমাধান করলে আমরাই করব। ওরা পারবে না।” প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন বিমল গুরুংদেরও। স্পষ্ট বোঝালেন, বিধানসভা ভোটের আগে গুরুং যতই মমতার পাশে দাঁড়ান, তাঁদের গোর্খাল্যান্ডের দাবি মোটেই তেমন আমল দেবে না রাজ্য সরকার।
পাহাড়ে গোর্খাদের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি অনেকদিনের। রাজনৈতিক দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা (GJM) গুরুংয়ের নেতৃত্বে থাকাকালীন সেই দাবিতে ইন্ধন যুগিয়ে গিয়েছে। কিন্তু GTA চুক্তি এবং পৃথক রাজ্যের দাবি মেনে নেওয়ার পক্ষে দার্জিলিং, তরাই-ডুয়ার্সের অবস্থান মোটেই অনুকূল নয়। তাই তাঁদের গোর্খাল্যান্ড কিংবা রাজ্য ভাঙার দাবিকে মান্যতা দেওয়া হয়নি কখনও।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধী বিজেপি বরাবর গুরুংদের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে। অর্থাৎ তাঁরা রাজ্য ভাগের পক্ষে। আর তাই ক্ষমতায় এলে গোর্খাল্যান্ডের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন নেতারা। তাই ২০১৪ এবং ২০১৯এর লোকসভা ভোটে পাহাড় থেকে তৃণমূল নয়, জিতেছেন বিজেপি প্রার্থীরাই। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির এবিপিসি ময়দানের জনসভা থেকে এই বিষয়টি আরও স্পষ্ট করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ”৬ বছর ধরে ওরা গুরুংদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছে গোর্খাল্যান্ড করে দেবে বলে। তাই ২০১৪এ একবার পাহাড়ে জিতেছে, কিন্তু প্রতিশ্রতি রাখেনি। আবার ২০১৯এ বিজেপি জিতেছে। আমরা কিন্তু গোর্খাল্যান্ডের প্রতিশ্রুতি দিইনি, তাই আমরা জিতিওনি।” এরপরই তিনি আত্মবিশ্বাসের সুরে বলেন, ”পাহাড়ের সমস্যা সমাধান করতে পারলে একমাত্র আমরাই পারব। বিজেপি পারবে না, ওদের দ্বারা হবে না।” এই সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন, গোর্খাল্যান্ডের দাবি মোটেই মেনে নেওয়া হবে না, সে গুরুংরা যতই তৃণমূলকে সমর্থন দিক।
আসলে, সাড়ে তিন বছরের অজ্ঞাতবাস থেকে ফিরে এসে বারবার মমতা এবং তৃণমূলকে আগামী লোকসভা ভোটে সমর্থনের কথা বলেও কিন্তু বিমল গুরুং (Bimal Gurung), রোশন গিরিরা গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে সম্পূর্ণত সরে আসেননি। তাঁদের বার্তা দিতেই মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর এভাবে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করা, তা মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ।