রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

প্রণবের বই প্রকাশ নিয়ে প্রকাশ্য দ্বৈরথে অভিজিৎ-শর্মিষ্ঠা

December 16, 2020 | 2 min read

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের (Pranab Mukherjee) লেখা শেষ বই নিয়ে প্রকাশ্য দ্বৈরথে তাঁর ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ( Abhijit Mukherjee)এবং মেয়ে শর্মিষ্ঠা (Sharmistha Mukherjee) মুখোপাধ্যায়।

প্রণব-পুত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত অপ্রকাশিত ওই আত্মকথার পাণ্ডুলিপি তিনি নিজে খতিয়ে দেখতে চান। ওই আত্মকথা বই হিসাবে প্রকাশ, বা তার কোনও অংশবিশেষ কোথাও প্রকাশ করার আগে অভিজিতের লিখিত অনুমতিও জরুরি বলে টুইট করেন তিনি।

সেই সঙ্গে তাঁর আরও দাবি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কেবলমাত্র কয়েকটি সংবাদমাধ্যমেই বইটির সারাংশ প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও নিজের দাদার এই ‘তত্ত্ব’ খারিজ করে শর্মিষ্ঠার পাল্টা দাবি, ‘সস্তা প্রচারে’র জন্যই বাবার আত্মকথা প্রকাশে ‘অহেতুক বাধা’র সৃষ্টি করছেন অভিজিৎ।

প্রণবের আত্মকথার শেষ পর্ব ‘দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ারস’ এখনও অপ্রকাশিত‌। সেই অপ্রকাশিত স্মৃতিকথার সারাংশ প্রকাশ্যে আসার পরই তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক শুরু হয়।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, ওই বইতে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির জন্য সনিয়া গাঁধী এবং মনমোহন সিংহকেই দাবি করেছেন প্রণব। স্বাভাবিক ভাবেই প্রণবের ওই মত ঘিরে দিল্লির রাজনৈতিক অলিন্দেও ঝড় ওঠে। তবে এ বার সেই ঝড়ের আঁচ লেগেছে প্রণবের নিজের পরিবারেই।

মঙ্গলবার প্রণবের বই নিয়ে একাধিক টুইট করেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ, প্রণবপুত্র অভিজিৎ। তিনি লিখেছেন, ‘কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে আমার লিখিত অনুমতি ছাড়াই ওই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সারাংশ ছাপা হয়েছে। লেখকের ছেলে হিসেবে আমার অনুরোধ, দয়া করে এর প্রকাশনা বন্ধ করুন’। এতেও শেষ নয়। অভিজিতের পরের বক্তব্য, ‘যেহেতু বাবা আর বেঁচে নেই। তাই তাঁর ছেলে হিসেবে আমি ওই বইয়ের প্রকাশনার আগে তা শেষ খসড়া খতিয়ে দেখতে চাই। বাবা বেঁচে থাকলে তিনিও তা-ই করতেন’। প্রকাশকের উদ্দেশে তাঁর টুইট, ‘ওই খসড়া দেখা না পর্যন্ত আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া এই বইয়ের প্রকাশনা অবিলম্বে বন্ধ রাখার অনুরোধ করছি। এ বিষয়ে একটি সবিস্তার চিঠি আপনাদের পাঠানো হয়েছে। শীঘ্রই তা হাতে পাবেন’।

অভিজিতের এই বক্তব্যের সঙ্গে প্রণব-কন্যা যে সহমত নন, তা স্পষ্টই জানিয়েছেন। টুইটারেই দাদাকে তোপ দেগে তাঁর মন্তব্য, ‘লেখকের মেয়ে হিসেবে দাদাকে অনুরোধ, বাবার লেখা শেষ বইপ্রকাশে অহেতুক বাধা তৈরি করবেন না। অসুস্থ হওয়ার আগেই ওই বইের পাণ্ডুলিপি শেষ করেছিলেন তিনি (প্রণব)’।

শর্মিষ্ঠার দাবি, ‘(বইয়ের) শেষ খসড়ায় আমার বাবার হাতেলেখা নোট এবং মন্তব্য ছিল, যা মান্য করা হয়েছে।’ ওই বইয়ের কংগ্রেসের ভরাডুবি প্রসঙ্গে যে মতামত ব্যক্ত করেছেন প্রণব, তা নিয়েও নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন শর্মিষ্ঠা। তিনি লিখেছেন, ‘যে মতামত প্রকাশ করেছেন (প্রণব), তা তাঁর নিজস্ব। এবং এ নিয়ে সস্তা প্রচারের উদ্দেশ্যে বইয়ের প্রকাশনা বন্ধ করার চেষ্টা করা কারও উচিত নয়। এতে প্রয়াত বাবাকে অশ্রদ্ধাই করা হবে’।

অভিজিতের মতামতকে প্রকাশ্যেই খণ্ডন করা ছাড়াও তাঁকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি শর্মিষ্ঠা। টুটটারে তিনি অভিজিতের ভুল ধরিয়ে লিখেছেন, ‘প্রসঙ্গত দাদা, বইয়ের নামটা দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল ইয়ারস, দ্য প্রেসিডেন্সিয়াল মেমোয়ার্স নয়’।

প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক জীবন নিয়ে আত্মজীবনীমূলক বইয়ের সিরিজে প্রণবের শেষ লেখা বই এটি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ওই বইয়ের সারাংশ থেকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘কংগ্রেসের কয়েক জন সদস্য তত্ত্বগত ভাবে মনে করেন যে ২০০৪-এ আমি প্রধানমন্ত্রী হলে ’১৪-র লোকসভায় ভরাডুবির হাত থেকে বেঁচে যেত দল। যদিও আমি তা মনে করি না। আমার মতে, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই দলীয় নেতৃত্ব রাজনৈতিক লক্ষ্য হারিয়েছিল। এক দিকে, সনিয়া দল চালাতে অপারগ ছিলেন। অন্য দিকে, সংসদে দীর্ঘ দিন অনুপস্থিতির কারণে সংসদদের থেকে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ঘুচে গিয়েছিল’।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Pranab Mukherjee, #Sharmistha Mukherjee, #Abhijit Mukherjee

আরো দেখুন