দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

বিজেপির হামলায় জখম তৃণমূল কর্মী, গোঘাটে বাড়ছে উত্তেজনা

December 16, 2020 | 2 min read

সোমবার রাতে পিকনিকের আসর থেকে এক তৃণমূল (Trinamool) কর্মীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে গোঘাটের নকুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের দড়ি নকুণ্ডা এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। এদিন সকালেও তার রেশ ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় বিশাল পুলিসবাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের দলীয় কর্মীকে রাতের অন্ধকারে রাস্তায় একা পেয়ে প্রাণনাশের চেষ্টা করেছিল বিজেপির দুষ্কৃতীরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।

পুলিস জানিয়েছে, খবর পেয়েই বিশাল পুলিস বাহিনী এলাকায় যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এদিন বিকেলে ঘটনার বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাত প্রায় সাড়ে ৯টা নাগাদ গ্রামের রাস্তা ধরে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন তৃণমূল কর্মী খোকন রায় (Khokan Roy)। সেই সময় দড়ি নকুণ্ডা এলাকায় রাস্তার পাশে পিকনিক করছিল বিজেপির (BJP) লোকজন। খোকনবাবু বলেন, আমি ব্যক্তিগত কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলাম। রাস্তায় একা পেয়ে ওরা প্রথমে আমাকে কটুক্তি করতে থাকে। এরপর বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী আমাকে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে। লাঠি, রড দিয়ে আমাকে মারধর করেছে। আমি রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে ওরা সবাই মিলে আমাকে লাথি মারে। কোনওক্রমে পালিয়ে আমি প্রাণ বাঁচাই। ওই রাতে আতঙ্কে ঘর থেকে চিকিৎসার জন্য বাইরে বের হতে পারিনি। এদিন সকালে অন্যান্য দলীয় কর্মীদের বিষয়টি জানাই।

এদিন সকালে খবর পেয়ে জখম কর্মীকে গোঘাট গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকরা। এ ব্যাপারে গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের মনোরঞ্জন পাল বলেন, আমাদের ওই দলীয় কর্মী অত্যন্ত নিরীহ। ওকে রাস্তায় পেয়ে প্রাণনাশের চেষ্টা করেছিল বিজেপির লোকজন। বিজেপি (BJP) এলাকায় অশান্তি তৈরি করতে চাইছে। ওদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের কোনও যোগাযোগই নেই। রাজ্য সরকারের একাধিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে ভয় পাচ্ছে বিজেপি। সেই কারণে ওরা আমাদের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের রাস্তায় একা পেয়ে হিংসার ঘটনা ঘটাচ্ছে। বিষয়টি আমরা পুলিসকে জানিয়েছি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে গোঘাটের সাধারণ মানুষ এই অরাজকতার উত্তর দেবে।

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির আরামবাগ জেলা সাংগঠনিক সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, আমাদের দলের কর্মী সমর্থকরা কখনও হিংসার রাজনীতি করে না। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে ওই ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও কর্মী বা সমর্থক যুক্ত নেই। ওরা আমাদের নামে মিথ্যা বদনাম করতে চাইছে। তৃণমূল জন সমর্থন হারিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, গত লোকসভা নির্বাচনে গোঘাট বিধানসভা এলাকায় ভালো ফলাফল করেছিল বিজেপি। তারপর থেকে একাধিকবার দুই দলের মধ্যে অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। এমনকী ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই ওই গ্রামেই খুন হন তৃণমূল কর্মী লালচাঁদ বাগ। তৃণমূলের অভিযোগ, ২১ জুলাই দলের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে কলকাতায় যাওয়ার অপরাধে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই লালচাঁদকে পিটিয়ে খুন করেছিল। তারপর আবারও তৃণমূল কর্মীর উপর এই হামলার ঘটনায় এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি যথেষ্ট উত্তপ্ত। আগামী বছরেই বিধানসভা নির্বাচন (West Bengal Assembly Election 2021) রয়েছে। তার আগে গোঘাটে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। ঘটনার পর এলাকা থমথমে রয়েছে। এখনও পুলিস গ্রামে টহল দিচ্ছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #Trinamool Congress, #Goghat

আরো দেখুন