আশ্বাস নয়, সমাধানের জন্য কৃষকদের নিয়ে হোক কমিটি গঠন, কেন্দ্রকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
আলোচনার মাধ্যমে কৃষকদের আন্দোলনে ইতি টানার জন্য কেন্দ্রকে পরামর্শ দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘অবিলম্বে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না হলে কৃষক আন্দোলন (Farmers Protest) অচিরেই জাতীয় সমস্যা হয়ে উঠবে’।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের তরফে কৃষকদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, নয়া বিলে তাঁদের কোনও ক্ষতি হবে না। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ বিষয়ে কেন্দ্রের যুক্তি কার্যত খারিজ করে দিয়েছে। বেঞ্চের মন্তব্য, ‘যখন তাঁদের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তখন এমন আশ্বাসের মানে কী?’
আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে কেন্দ্রের আলোচনার পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত। একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিবাদী কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও এখনও কোনও সমাধানসূত্রের সন্ধান মেলেনি। এ নিয়ে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘এ ভাবে চললে আপনাদের আলোচনা ফের ব্যর্থ হবে। ওঁরা (কৃষকেরা) রাজি হবেন না। এমন একটি নাম বলুন, যিনি সামনে আসতে পারেন।’’ সমস্যার সমাধানে, বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনেরও ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
শীর্ষ আদালতে পরস্পর বিরোধী একাধিক আবেদনের শুনানি হয় বুধবার। প্রথমটি, গত ২০ দিন ধরে দিল্লির সীমানায় রাস্তা আটকে কৃষকদের বিক্ষোভের জেরে তৈরি হওয়া সমস্যার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা। সেখানে, আবেদনকারী পক্ষের অভিযোগ, যান চলাচলে বিঘ্ন হওয়ার অসুবিধার পাশাপাশি দিল্লিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। পাশাপাশি, কৃষকদের জমায়েত থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোরও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলাটি কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া কৃষি আইনের (Farm Laws) বিরুদ্ধে কৃষক সংগঠনগুলির দায়ের করা মামলা। সেখানে, নয়া আইনে কৃষকদের স্বার্থহানির পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ তোলা হয়েছে। তৃতীয় একটি আবেদনে কৃষকদের দিল্লিতে প্রবেশ এবং যন্তরমন্তরে বিক্ষোভের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল।
এ ক্ষেত্রে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘বেশির ভাগ আবেদনই কল্পিত এবং ভিত্তিহীন। আবেদনকারী পক্ষের সঙ্গে আন্দোলনের প্রত্যক্ষ কোনও যোগাযোগ নেই। আন্দোলনের অধিকার দাবি করা ছাড়া ওই আবেদনগুলির আইনগত কোনও ভিত্তিও নেই’।