সরকারকে আইন প্রত্যাহারে ‘বাধ্য’ করব, হুঁশিয়ারি কৃষক সংগঠনের
সরকার যদি বলতে পারে তারা কৃষি আইন (Farm Laws) প্রত্যাহার করবে না, তা হলে আমরাও বলছি, সরকারকে এই আইন প্রত্যাহার করিয়েই ছাড়ব। আরও জোরদার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে এমনই বার্তা দিলেন কৃষক নেতারা।
কৃষক নেতা জগজিৎ দাল্লেওয়ালের কথায়, “আমাদের লড়াই এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে সেখান থেকে আমাদের জিতে ফিরতেই হবে।” কৃষকরা আলোচনা চাইছেন। কিন্তু সরকার তাঁদের দাবি কানেই তুলছে না। এমনকি কোনও পোক্ত প্রস্তাবও কৃষকদের সামনে রাখা হচ্ছে না বলে অভিযোগ জগজিতের। তবে আন্দোলনের ঝাঁঝ যে আরও বাড়াতে চলেছে কৃষক সংগঠনগুলি সে ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।
জগজিতের কথায়, “বিপুল সংখ্যক মহিলা বিক্ষোভকারী এই আন্দোলনে যোগ দেবেন। তার জন্য সব রকম আয়োজন করা হচ্ছে।” ইতিমধ্যেই আরও কৃষক দিল্লির সীমানায় হাজির হয়েছে। আজ। বুধবার নয়ডা এবং দিল্লির মাঝে চিল্লা সীমানা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করার হুমকি দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলো। তাঁদের অভিযোগ, দিল্লিতে পৌঁছনোর আগেই কৃষকদের বিভিন্ন সীমানায় আটকে দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়ার একটা প্রচেষ্টা চলছে। তবে হাজার চেষ্টা করেও তাঁদের আন্দোলনকে থামানো যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলো।
২০ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেল কৃষক আন্দোলনের। এখনও কোনও সামাধানসূত্র মেলেনি। সরকার যেমন নিজেদের অবস্থানে অনড়, তেমনই কৃষক নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের দাবি থেকে পিছু হটে আসার কোনও প্রশ্নই নেই। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে উঠছে। এ দিকে, এই আন্দোলনের জেরে পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, হিমাচল প্রদেশের মতো বেশ কয়েকটি রাজ্য আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে। মঙ্গলবার এমনই একটি তথ্য তুলে ধরেছে ভারতের চেম্বার্স অব কর্মাস। ফলে বাণিজ্য এবং শিল্প মহল থেকেও একটা চাপ সৃষ্টি হচ্ছে সরকারের উপর।
তবে সরকার (Central Government) যে কোনও চাপের কাছে মাথা নত করবে না সে ইঙ্গিতও দিয়েছে। মঙ্গলবারই গুজরাতের কচ্ছে গিয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই আইন কৃষকদের স্বার্থেই। আজ যাঁরা এই আইনের বিরোধিতা করছেন, এক সময় তাঁরা এই আইনের পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন।” সরকার যে এই আইন নিয়ে পিছু হটবে না গত কাল সে কথা স্পষ্ট করে দেন মোদী। পাশাপাশি এটাও জানান, এই আইনের ফলে কতটা সুবিধা হবে সে বিষয়টি কৃষকদের বুঝিয়েই ছাড়বেন।
মোদী বলেন, “কৃষকদের উস্কানো হচ্ছে। তাঁদের কাঁধে বন্দুক রেখে রাজনীতি করা হচ্ছে। তাঁদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে এই বলে যে, নতুন আইন বলবৎ হলে তাঁরা জমি হারাবেন। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস রাজনীতির এই চক্র থেকে বেরিয়ে এসে আসল সত্যটা বুঝতে পারবেন কৃষকরা।”
অন্য দিকে, উত্তরপ্রদেশের খাপ পঞ্চায়েতের নেতারাও কৃষকদের এই আন্দোলনে (Farmers Protest) সামিল হওয়ার কথা জানিয়েছেন। অল খাপ কাউন্সিল-এর সেক্রেটারি সুভাষ বালিয়ান জানান, সমস্ত খাপ পঞ্চায়েতের নেতারা একত্রিত ভাবে কৃষক আন্দোলনকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ১৭ ডিসেম্বর তাঁরা দিল্লিতে আন্দোলনে সামিল হতে চলেছেন বলেও জানান বালিয়াল।
এই আন্দোলনে সামিল হয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আগামী ২০ ডিসেম্বর তাঁদের জন্য শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস পালন করা হবে বলে জানিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলো।