শাঁখ-উলুধ্বনিতে সরগরম শিলিগুড়ির বঙ্গধ্বনি যাত্রা
বঙ্গধ্বনি যাত্রায় সরগরম শিলিগুড়ি (Siliguri)। পৌষ মাসের শুরুতেই শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি ও বাজনা বাজিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। হাতজোড় করে তাঁরা আমজনতার কাছে যাচ্ছেন। পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে গেরুয়া শিবিরকে বিনাশ করার আর্জি রাখছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শহরে থাকায় এই কর্মসূচি নিয়ে প্রবল উদ্দামে মেতেছেন তাঁরা। তবে এ নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ পদ্ম শিবির। তারা পাল্টা ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচি নিয়ে ময়দানে নেমেছে। বিধানসভা ভোটের মুখে দু’পক্ষের এমন কর্মসূচি ঘিরে রাজনীতির আঙিনায় জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি দিয়ে জনসংযোগ যাত্রা শুরু করে ঘাসফুল বাহিনী। তারপর কখনও তাদের ছাত্র-যুব, কখনও মহিলা, কখনও শ্রমিক, আবার কখনও শিক্ষক এবং কৃষক সংগঠন রাস্তায় নামে। তাঁরা বাড়ি বাড়ি কিংবা চায়ের ঠেকে গিয়ে জনসংযোগ রক্ষা করছেন। এবার তাঁরা নিবিড় জনসংযোগ গড়তে অভিনব কৌশল নিয়েছে। যার নাম ‘বঙ্গধ্বনি যাত্রা’।
এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতাদের গলায় থাকছে দলীয় প্রতীক চিহ্নযুক্ত উত্তরীয়। কর্মীদের পরনে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির নাম লেখা ও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া গেঞ্জি ও মহিলাদের পরনে লালপাড় শাড়ি। সকলের হাতে থাকছে দলীয় ঝান্ডা। শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনি দিয়ে বাজনা বাজিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরছেন তৃণমূল নেতারা।
সোমবার উত্তরবঙ্গে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিন থেকেই বঙ্গধ্বনি যাত্রায় (Bangadwani Yatra) প্রবল উদ্দমে ঝাঁপিয়েছেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। মঙ্গলবার শহরের ১৮ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডে বঙ্গধ্বনি যাত্রা করা হয়। বুধবার শহরের ১১, ১২ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের এই যাত্রা হয়। স্থানীয় ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর তথা এসজেডিএ’র ভাইস চেয়ারম্যান নান্টু পাল, পুরসভার ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর নিখিল সাহানি, স্বপন দাস প্রমুখ। তাঁদের সঙ্গে পা মেলান দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি (সমতল) রঞ্জন সরকার, দলের বর্ষীয়ান নেতা প্রতুল চক্রবর্তীও। মিছিল দেখতে অনেকেই ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁদেরও কেউ কেউ উলুধ্বনি দিয়ে তৃণমূল নেতাদের সমর্থন জানান। ঢাকের আওয়াজ পেয়ে কেউ কেউ আবার দোতলার বারান্দায় দাঁড়ান। কেউ কেউ জানালা দিয়ে উঁকি মারেন। তাঁদের উদ্দেশে কখনও হাতজোড় করেন, আবার কখনও হাত নাড়েন তৃণমূল নেতারা। পাশাপাশি তাঁরা দুয়ারে সরকার কর্মসূচি নিয়ে তৈরি দলীয় লিফলেট বাসিন্দাদের কাছে তুলে দেন। শুধু বাসিন্দা নয়, এদিন তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতারা পথচারী ও বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কাছেও যান। চলার পথে তাঁরা বিভিন্ন মন্দিরে পুজো দেন। বিধান রোডের মা ভবানী মন্দিরে পুজো দিয়ে খিচুড়ি খেয়ে যাত্রা শেষ করেন তাঁরা।
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি (সমতল) বলেন, দলের রাজ্য কমিটির নির্দেশে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে বাসিন্দাদের যেমন অবহিত করা হচ্ছে, তেমনই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে শহরের মাটি থেকে সাফ করার ডাক দেওয়া হচ্ছে। এই কর্মসূচি শহরে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এবার বিধানসভা নির্বাচনে এর সুফল মিলবে।