দেশ বিভাগে ফিরে যান

পিএম কেয়ার্স সরকারি না বেসরকারি তহবিল? বিতর্ক

December 17, 2020 | 2 min read

ফের বিতর্কের মুখে পিএম কেয়ার্স তহবিল। এই তহবিল কি সরকারি না বেসরকারি ট্রাস্ট? কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে একে সরকারি তহবিল বলা হয়েছে। অথচ তহবিলের দলিলেই তা বেসরকারি ট্রাস্ট হিসেবে নথিবদ্ধ রয়েছে। এই অসঙ্গতি নিয়ে নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) সরকারের পিএম কেয়ার্স তহবিল নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

মূলত করোনার মতো অতিমারিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের জন্য গঠিত এই ট্রাস্টের রেজিস্ট্রি করা হয়েছে দিল্লির রাজস্ব বিভাগে। তাতে প্রধানমন্ত্রীকে এই ট্রাস্টের চেয়ারপার্সন এবং কেন্দ্রের শীর্ষ মন্ত্রীদের ট্রাস্টি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি পিএম কেয়ার্সের ওয়েবসাইটে এই ট্রাস্টের দলিল প্রকাশ করার পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। ওই দলিলে একে সরকারি ট্রাস্ট বলে উল্লেখ নেই। ট্রাস্টের দলিলের ৫.৩ নম্বর পয়েন্টে লেখা রয়েছে, ‘এই ট্রাস্টের নিয়ন্ত্রণ বা মালিকানা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে নেই। কেন্দ্র বা তার কোনও সংস্থার অর্থানুকূল্যে এটি চলছে না। এর উপর কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও প্রকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণও নেই’।

চলতি বছরের ২৭ মার্চ পিএম কেয়ার্স (PM CARES) বা প্রাইম মিনিস্টার্স সিটিজেন্স অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যান্ড রিলিফ ইন ইমার্জেন্সি সিচুয়েশনস ফান্ড গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অতিমারির ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত-সহ সব রকমের সহায়তার জন্য গঠিত এই তহবিল মূলত কর্পোরেট অনুদান প্রাপ্তির জন্য গঠিত হয়। পরের দিন, অর্থাৎ ২৮ মার্চ এর রেজিস্ট্রি করা হয়। সে দিনই কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক একটি অফিস মেমোরেন্ডাম জারি করে। তাতে এই তহবিলকে কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলি (সিএসআর)-এর আওতায় নিয়ে আসা হয়। যার ফলে তহবিলের জন্য কর্পোরেটের কাছ থেকে অনুদানে বাধা নেই বলে জানানো হয়। একটি জনস্বার্থ মামলায় সমাজকর্মী অঞ্জলি ভরদ্বাজ কতগুলি নথি পেশ করে এই বিষয়টি সামনে আনেন। ওই নথি অনুযায়ী, ‘এটি কেন্দ্রীয় সরকারের গঠন করা তহবিল’। তবে দলিলের বলা হয়েছে, এটি সরকারি তহবিল নয়, ফলে কর্পোরেট অনুদানের যোগ্য। মাস দুয়েক ধরে এই অসঙ্গতি প্রকাশ্যে আসেনি। ওই সময়ের মধ্যে কর্পোরেট অনুদান জমা পড়েছে তহবিলে। এই অসঙ্গতি নিয়ে অগস্টে মোদী সরকারের সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন কংগ্রেস (Congress) নেতা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তাঁর প্রশ্ন ছিল, এই তহবিল যদি কেন্দ্রীয় সরকার গঠন না করেন, তবে প্রধানমন্ত্রী এবং তিন জন মন্ত্রী এতে ট্রাস্টি হিসেবে রয়েছেন কেন? কারা তাঁদের ট্রাস্টি হিসেবে বাছাই করলেন? তাঁর আরও জিজ্ঞাসা, ‘একে বেসরকারি তহবিল বলা হলে, সিএসআর-এর আওতায় অনুদান কেন আসছে?’ এ বিষয়ে জনস্বার্থ মামলারও জবাব দিতে রাজি হয়নি মোদী সরকার।

পিএম কেয়ার্স গঠনের পর থেকেই দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়েছে এই তহবিল। এই তহবিলে অর্থের পরিমাণ বা কোন খাতে তা ব্যয় করা হচ্ছে, তা নিয়েও বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদী (Narendra Modiসরকার। তবে সেই বিতর্ক থিতিয়ে পড়তে না পড়তেই ফের প্রশ্নের মুখে পড়ল পিএম কেয়ার্স তহবিল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Narendra Modi, #Corruption, #PM CARES

আরো দেখুন