দূষণ রোধে নয়া পদক্ষেপ কলকাতা পুরসভার
বাড়ির সামনে কি দীর্ঘদিন ধরে জঞ্জাল পড়ে রয়েছে? কিংবা চোখের সামনে দেখছেন জলের অপচয় বা ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে ইমারতি বর্জ্য? অথবা পুকুর ভরাট চলছে? তাহলে সরাসরি অভিযোগ জানান কলকাতা পুরসভার ওয়েবসাইটে। ওয়েবসাইটে তেমনই ‘ফিচার’ যুক্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। উদ্দেশ্য, নাগরিক সচেতনতা বাড়ানো।
সম্প্রতি, বেহালার ১২৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে পুকুর ভরাটের একটি অভিযোগ আসে। ‘টক টু কেএমসি’ অনুষ্ঠানে ফোন করে অভিযোগ জানিয়েছিলেন সেখানকার এক বাসিন্দা। বালিগঞ্জ অঞ্চলে একটি জায়গায় গলির মুখে জঞ্জালের স্তূপের অভিযোগ সামনে আসে। তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
পুর-ওয়েবসাইটে ‘গ্রিভান্স’ (Grievance Cell) অপশনে গিয়ে ‘রেজিস্টার পলিউশন গ্রিভান্স’-এ অভিযোগ জানাতে পারেন যে কোনও নাগরিক। কী কী তথ্য দিতে হবে সেখানে? যিনি অভিযোগ জানাচ্ছেন, তাঁর নাম ও ঠিকানা দেওয়ার পাশাপাশি যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁর নাম এবং যে এলাকা নিয়ে অভিযোগ, সেখানকার ঠিকানাও দিতে হবে। সেই সঙ্গে কী ধরনের ‘দূষণ’ (Pollution), তাও উল্লেখ করতে হবে। বায়ু দূষণ, জলের অপচয়, ইমারতি বর্জ্য, চিকিৎসা বর্জ্য, অন্যান্য জঞ্জাল, জলাভূমি বোজানো সহ ৯ ধরনের অভিযোগ জানানোর অপশন রয়েছে। সেখানেই যে কোনও নাগরিক অভিযোগ নথিভুক্ত করতে পারেন।
বহুবার ‘টক টু কেএমসি’ অনুষ্ঠানে পুকুর ভরাটের অভিযোগ এসেছে। যে কারণে ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভা ওয়েবসাইটে শহরের জলাভূমির তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে। জমি কিনতে বা বাড়ি করতে গেলে কোথায় কোথায় জলাজমি আছে, তার সুস্পষ্ট ধারণা যাতে নাগরিক পেতে পারেন, তারজন্যই ওই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সংযুক্ত কলকাতা বিশেষ করে বেহালা, গড়িয়া সহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বহু অভিযোগ এসেছে। যেখানে বাড়ির মিউটেশন কিংবা অন্য কোনও কাজ করতে গেলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে নাগরিকদের। দেখা যাচ্ছে, একের পর এক পুকুর ভরাট করে প্লট বানিয়ে বেচে দেওয়া হয়েছে জমি। এখন দেখা যাচ্ছে, ওই জমিতে বাড়ি বানাতে গিয়ে কিংবা পুরনো বাড়ির মিউটেশন, সম্পত্তি করের মূল্যায়ন করতে গিয়ে বাধা পাচ্ছেন নাগরিকরা। সেই কারণেই আগামীদিনে ওই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পুরসভা জলাজমির তালিকা তুলে দিয়েছে ওয়েবসাইটে। কোনও নাগরিক সম্পত্তি কর সংক্রান্ত তথ্য দেখতে গেলে ওই ঠিকানার যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন।
কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal corporation) পরিবেশ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা প্রশাসক বোর্ডের অন্যতম সদস্য স্বপন সমাদ্দার বলেন, সচেতন করা আমাদের কর্তব্য। সব সময় প্রশাসনের পক্ষেও সব দিক দেখা সম্ভব হয় না। ইতিমধ্যেই গ্রিভান্স সেলে আসা একাধিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাই পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, এমন কিছু দেখলে নাগরিকরা সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন ওয়েবসাইটে।