হোর্ডিংয়ে অমিত শাহর ছবির নিচে রবীন্দ্রনাথ! বিতর্ক তুঙ্গে
রবিবার অর্থাৎ ২০ তারিখ রবীন্দ্রনাথের প্রিয় বোলপুরে পা রাখবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বোলপুরে রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক – দুটি কর্মসূচি রয়েছে অমিত শাহর (Amit Shah)। তাঁকে সম্মান জানাতে বোলপুরকে শাহর ব্যানার, পোস্টারে প্রায় মুড়ে ফেলেছে বিজেপি। আর সেই পোস্টার ঘিরেই দেখা দিয়েছে বিতর্ক। ফ্লেক্সে দেখা যাচ্ছে, অমিত শাহের ছবির নিচে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি, তার নিচে আবার স্থানীয় বিজেপি সাংসদ অনুপম হাজরার ছবি। কেন ব্যানারে অমিত শাহর নিচে রবীন্দ্রনাথের স্থান? এই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন রবীন্দ্রপ্রেমী মানুষজন।
শুক্রবার সকালে বোলপুরের বিভিন্ন প্রান্তে এই পোস্টার চোখে পড়তেই তীব্র শোরগোল শুরু হয়েছে। বিশ্বভারতী (Vishva Bharati)তথা শান্তিনিকেতনের প্রাক্তনী, আশ্রমিক ও সাধারণ মানুষ এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, এই সমস্ত ক্ষেত্রে দেখা যায়, মনীষীদের সম্মান জানিয়ে তাঁদের ছবিই হোর্ডিং বা ব্যানারে সবার উপরে স্থান পায়। কিন্তু এখানে ঠিক তার উলটো ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, অমিত শাহকে স্বাগত জানাতে গিয়ে এসব পোস্টার, ব্যানারে বিজেপি আসলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অসম্মান করেছে। তা তাঁরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। বীরভূম জেলা প্রাথমিক স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েকের মন্তব্য, ”এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। গুরুদেবকে অপমান করার অধিকার ওদের কে দিয়েছে?”
সংবাদমাধ্যমে এই পোস্টারের ছবি ছড়িয়ে পড়ায় প্রবল বিতর্ক শুরু হতেই বিপাকে পড়ে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিতর্ক এড়াতে পোস্টারগুলো খোলার তোড়জোড় শুরু করেছেন তাঁরা। এমনিই বাংলাকে পাখির চোখ করে তা দখলের লক্ষ্যে বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিতে মনোনিবেশ করেছে বিজেপি। স্বয়ং নরেন্দ্র মোদিই সম্প্রতি বারবার বাংলার প্রতি তাঁর যত্নশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। দুর্গাপুজোয় বঙ্গবাসীকে বাংলায় শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি কখনও দক্ষিণেশ্বরের মন্দির, কখনও কোচবিহার রাজবাড়িকে তিনি আন্তর্জাতিক স্তরের ভারচুয়াল বৈঠকের প্রেক্ষাপট হিসেবে ব্যবহার করেছেন। বারবারই বিজেপি নেতারা বলে থাকেন, বাংলার মাটি রবীন্দ্র-নজরুলের মাটি, তার অবমাননা করছে তৃণমূল। বিজেপি ক্ষমতায় এলে তাঁদের যথাযথ সম্মান দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতিও শোনা গিয়েছে তাঁদের গলায়। কিন্তু বোলপুরে অমিত শাহর এই হোর্ডিংয়ে নিজেদের দাবি নিয়ে তাঁরা নিজেরাই বিপাকে পড়লেন বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের।