ভোটযুদ্ধে মমতার অস্ত্র বুথস্তরে জনসংযোগ
শিয়রে বিধানসভা নির্বাচন। ঘনঘন রাজ্যে আসছেন বিজেপির (BJP) শীর্ষ নেতারা। হাওয়ায় ভাসছে দল ভাঙনের ‘চক্রান্তে’র অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে হতাশা নয়, বরং একজোট হয়ে দলীয় কর্মীদের পাল্টা ভোটযুদ্ধে নেমে পড়ার বার্তা দিলেন তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই লড়াইয়ে তাঁর অস্ত্র বুথস্তরে নিবিড় জনসংযোগ। সাফ জানালেন, উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে ঘরে ঘরে। শুক্রবার বিকেলে কালীঘাটের (Kalighat) বাড়িতেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন নেত্রী। একের পর এক নেতার দল ছাড়ার হিড়িকের মধ্যেই এই বৈঠক ঘিরে জল্পনা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু সেসব ছুঁতে পারেনি মমতাকে। দৃঢ়তার সঙ্গে জানিয়েছেন, ‘কেউ কেউ বেরিয়ে যাচ্ছে বলে মোটেই চিন্তিত নই। গাছের পাতা ঝরে গেলে নতুন পাতা গজায়। ঝরা পাতা নিয়ে অত চিন্তা করতে নেই। সাড়ে ন’বছর ক্ষমতা ভোগ করে, ভোটের আগে সব দল ছাড়ছেন। তাতে কিছু যাবে-আসবে না। নিজের প্রয়োজনে যাঁরা যেতে চায় যাক। নতুন করে লড়াই শুরু করব।’
কী করতে হবে? নেতাদের তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন নেত্রী। বলেছেন, দলীয় কর্মীদের জনসংযোগ বাড়াতে হবে। এলাকায় ছোট ছোট গ্রুপ মিটিং (Group Meeting), বুথ ধরে ধরে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়া জরুরি। আগামী ১ জানুয়ারি ব্লকে ব্লকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করতে হবে। বর্তমানে বঙ্গধ্বনি যাত্রা চলছে। তা শেষ হলেই নতুন করে জনসংযোগের কর্মসূচি নেবে তৃণমূল। নেত্রী ইতিমধ্যেই জেলাসফর শুরু করেছেন। পাশাপাশি দলীয় নেতাদের রাস্তায় নামার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বৈঠকে স্থির হয়েছে, আগামী ২৩ ডিসেম্বর কাঁথিতে পদযাত্রা করবেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim) এবং সংসদ সদস্য সৌগত রায় (Saugata Roy)। মেদিনীপুরে যাবেন পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস(AroopBiswas)। একদম শেষ শেষ পর্যায়ের আগে নামবেন তৃণমূল সুপ্রিমো নিজে। মানুষের কাছে তুলে ধরবেন কেন্দ্রের ষড়যন্ত্র। দল ভাঙানোর প্রক্রিয়ায় কীভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে লাগানো হচ্ছে, তার বিবরণ।
এদিনের বৈঠকে হাজির ছিলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়(Partha Chatterjee), সভাপতি সুব্রত বক্সি, সাধারণ সম্পাদক ফিরহাদ হাকিম, যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যস্তরের নেতা অরূপ বিশ্বাস এবং ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। তাঁরা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানেও লড়াইয়ের মেজাজ ধরা পড়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। বলেছেন, ‘গত ১০ বছর যে কাজ হয়েছে, তার খতিয়ান নিয়েই মানুষের কাছে যেতে হবে, বোঝাতে হবে। তাহলেই বিধানসভা ভোটে বিশাল ব্যবধানে জিতবে তৃণমূল।’