কবিগুরুকে অপমান বিজেপির অমার্জনীয় ধৃষ্টতা: সুপ্রিয় ঠাকুর
ফ্লেক্স দেখে খুব খারাপ লেগেছে। এই ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। এখন এরকমভাবেই রবীন্দ্রনাথকে (Rabindranath Tagore) অপমান করা একটা হুজুগে পরিণত হয়েছে। ফ্লেক্সে যেভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে(Amit Shah) বড় করে বিশ্বকবিকে ছোট করা হয়েছে, তা অমর্জনীয় ধৃষ্টতা। যা কখনওই কাম্য নয়। মনীষীদের ছবি ব্যবহার করা উচিত নয় কোনও রাজনৈতিক দলের। রবীন্দ্রনাথের ছবি রাজনৈতিক পোস্টারে (Political Posters) কেন ব্যবহৃত হবে? এটার কোনও দরকার ছিল না। বারবার এভাবে কবিগুরুকে অপমান করা হচ্ছে কেন? এই দুঃসাহস বাংলার মানুষ ক্ষমা করবেন না। অতীতে এরকমভাবে কোনও রাজনৈতিক দল রবীন্দ্রনাথের ছবি ব্যবহার করেনি। বিশ্বভারতীও (Visva Bharati) এ নিয়ে কিছু করবে না। সেটা প্রত্যাশিতও। আসলে বিজেপি’র সুরে সুর মেলাতে তারা ব্যস্ত। কেন্দ্রের অঙ্গুলিহেলনে চলছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। এই মুহূর্তে নীরব দর্শক হয়ে এসব দেখা ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় নেই। জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে বিতর্ক দেখা দিলেও বিশ্বভারতী প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় পায় না! এই ঘটনায় আমি হতবাক। রবীন্দ্রনাথের ‘জনগণমন’ জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদা পেয়েছে। সেখানে তাঁরই প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী এই বিতর্কে মুখে কুলুপ আঁটা মেনে নেওয়া অসম্ভব। আসলে গুরুদেবের গর্বের প্রতিষ্ঠানটি এখন মৃতপ্রায়। কোথাও তো তার জীবিত থাকার লক্ষণও দেখতে পাই না। কেন্দ্রে যেহেতু বিজেপি, তাই হয়তো তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চাইছে না বিশ্বভারতী। তাছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি যেভাবে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আনাগোনা শুরু হয়েছে এবং নানা কর্মকাণ্ড চলছে, তাও সংশয়ের। বিশ্বভারতীকে হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
বাংলার মানুষের কাছে তাই আমার প্রশ্ন রবীন্দ্রনাথের ভাষাতেই, ‘যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো/তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
লেখক: ঠাকুর পরিবারের অন্যতম সদস্য ও পাঠভবনের প্রাক্তন অধ্যক্ষ