অজান্তেই দেশে আক্রান্ত ৬০ কোটি
ভারতে কোভিড আর ‘বেপরোয়া’ হচ্ছে না। প্রবল শক্তিতে ফিরে আসার আশঙ্কাও ক্ষীণ। অজানা শত্রুর হানাদারি নিয়ে যাবতীয় আশঙ্কার কথা আপাতত উড়িয়ে দিলেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের দাবি, দেশে কমবেশি ৬০ কোটি মানুষ অজান্তেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
দেশে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা এখন কোটির ঘরে। তবে কমেছে সংক্রমণের দাপট। বাংলা সহ বিভিন্ন রাজ্যেও ছবিটা একই। ফলে শুক্রবার বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে করোনা রোগীর জন্য নির্দিষ্ট সরকারি বেডের সংখ্যা আরও দু’হাজার কমিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। কমছে দৈনিক মৃতের সংখ্যাও। এতটা স্বস্তির মধ্যেও উঁকি দিচ্ছে সেই একটাই প্রশ্ন, ফের করোনার ঢেউ ফিরে আসবে না তো? ফের লকডাউনের কবলে পড়বে না তো গোটা দেশ? বিশেষজ্ঞদের অবশ্য দাবি, প্রবল শক্তি নিয়ে করোনার ফিরে আসার আশঙ্কা ক্ষীণ। কারণ, খাতায় কলমে এক কোটি মানুষ আক্রান্ত হলেও ৬০ কোটি মানুষ ইতিমধ্যেই সংক্রামিত। তাঁদের শরীরে রোগলক্ষণও প্রকাশ পায়নি। হাম বা মিসলস বাদে সব সংক্রামক রোগেই এই ধরনের ‘সাব-ক্লিনিক্যাল ইনফেকশন’ হয়। সম্প্রতি অ্যান্টিবডি পরীক্ষা নিয়ে সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে বলে জানা গিয়েছে রাজ্য সরকার ও আইএমএ সূত্রে। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে টিকার প্রয়োজন পড়ছে মাত্র ২০ কোটি মানুষের।
করোনা নিয়ন্ত্রণে সফল চিকিৎসক ও আধিকারিকদের সম্মানিত করতে জাতীয় পর্যায়ের একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করেন আইএমএ’র শীর্ষকর্তারা। সেখানে তাঁরা জানান, প্রথম ধাপে অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে—একজন আক্রান্ত হলে তার ৩০ গুণ বেশি ‘সাব-ক্লিনিক্যাল’ পর্যায়ে সংক্রামিত হয়েছেন। অথচ, তাঁদের রোগের বহিঃপ্রকাশ হয়নি। কয়েক মাস বাদে অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় জানা যায়, ওই অনুপাত বেড়ে হয়েছে প্রায় ৬০ গুণ। শেষ পর্যায়ের সমীক্ষায় অনুপাত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১:৯০।
তাহলে কী প্রায় ৯০ কোটি মানুষ ইতিমধ্যেই অজান্তে সংক্রামিত? ওয়েবিনারে উপস্থিত স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী শনিবার বলেন, ‘ঠিক ৯০ কোটি মানুষকে সংক্রামিত বলা যাবে না। কারণ, সব জায়গায় সমানভাবে সংক্রমণ হয়নি। ফলত, আগের হিসেব ধরে ৬০ কোটি মানুষকে সংক্রামিত ধরছেন আইএমএ’র শীর্ষকর্তারা। এছাড়া মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ বা ৪০ কোটি শিশু থেকে ১৬ বছর বয়সীদের সংক্রমণ খুব কম হয়েছে।’ অর্থাৎ, প্রায় ১০০ কোটি মানুষকে নিয়ে উদ্বেগ কম। তাই টিকা এলে প্রথম পর্যায়ে দিতে হবে বাকি ৪০ কোটিকে। যার মধ্যে কোভিড যোদ্ধা, বয়স্ক ও কো-মরবিড রোগীরা অগ্রাধিকার পাবেন। সেই সংখ্যাটা ২০ কোটি।