উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

দশরথের যোগদানে ক্ষুব্ধ জেলা বিজেপি

December 20, 2020 | 2 min read

মেদিনীপুরে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে প্রাক্তন এমপি তথা তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ার জেলা কমিটির চেয়ারম্যান দশরথ তিরকি, আলিপুরদুয়ার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান আশিস দত্ত গেরুয়া শিবিরে যোগদানে ক্ষুব্ধ জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। এদিন সেই যোগদান অনুষ্ঠান শেষ হতেই বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার হুঙ্কার, দলের জেলা বা বুথ সভাপতিকে অসম্মান করে বাইরে গিয়ে আমাদের দলে যাঁরা যোগ দিচ্ছেন,আগামী দিনে বাইরে গিয়েই তাঁদের রাজনীতি করতে হবে। জেলায় দলের কর্মী সমর্থকরা ওঁদের মানবেন না। ক্ষোভের বহিপ্রকাশ এতটাই প্রকট ছিল যে, এদিন  সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া দশরথ তিরকির কুশপুতুলও দাহ করেন বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা।

তৃণমূলের জেলা কমিটির সহ সভাপতি অভিজিৎ মজুমদারও এদিন আশিসবাবুদের সঙ্গে বিজেপিতে নাম লেখান।  অন্যদিকে, তৃণমূলের উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেন, আগের দিন বঙ্গধ্বনি যাত্রায় সামিল হয়ে পরের দিন বিজেপিতে যোগ। এ ঘটনায় বোঝা যায়, এঁরা কতটা আদর্শ নিয়ে চলেন।

  
জেলা থেকে তৃণমূলের তিননেতার বিজেপিতে যোগদানের ফলে জেলাজুড়েই পদ্মফুল শিবিরে চাপা ক্ষোভ শুরু হয়েছে। কুমারগ্রাম, শামুকতলা ও বারোবিশায় দলের নিচুতলার কর্মীরা দশরথ তিরকির কুশপুতুলও এদিন পুড়িয়েছেন। কামাখ্যাগুড়িতে দশরথবাবুকে ‘পচা আলু’ বলে কটাক্ষ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন গেরুয়া সমর্থকরা। 


গঙ্গাপ্রসাদবাবুর এই বিস্ফোরক বক্তব্য ও কর্মীদের ক্ষোভ বিক্ষোভের জেরে জেলায় আগামীদিনে ফের নব্য ও আদি বিজেপি সংঘাত মাথাচাড়া দেবে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে। যদিও তৃণমূলের দলত্যাগী ওই তিন নেতা গঙ্গাপ্রসাদবাবুর বক্তব্য নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, আগে মেদিনীপুর থেকে জেলায় ফিরি তারপর এ নিয়ে দেখা যাবে। 


ক্ষুব্ধ গঙ্গাপ্রসাদবাবুর বক্তব্য, পঞ্চায়েত ভোটে কুমারগ্রাম ব্লকের কুমারগ্রাম চা বাগানে দশরথবাবু নিজের বুথেই দলকে জেতাতে পারেননি। অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ার পুরসভার বিদায়ী বোর্ডের আমলে বহু অনিয়ম ও কেলেঙ্কারি হয়েছে। যাঁর মাথা ছিলেন প্রাক্তন চেয়ার‌ম্যান আশিস দত্ত। 


এরপরেই গঙ্গাপ্রসাদবাবু দ্ব্যার্থহীন ভাষায় বলেন, জেলায় আমাদের নেতা-কর্মীরা কিন্তু এটা কোনওভাবেই ওঁদের মানবে না। এটা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিতে চাই। 


বিজেপি সূত্রে খবর, আগামী বিধানসভা ভোটে কুমারগ্রামে বিজেপির প্রার্থী হওয়ার অন্যতম দাবিদার দলের জেলা সম্পাদক বিনয় মিনজ ও এসটি মোর্চার রাজ্য সহ সভাপতি প্রাক্তন বিধায়ক মনোজ ওঁরাও। এদিন বিনয়বাবু ও মনোজবাবু দু’জনেই বলেন, আমরা দলের জেলা সভাপতির পাশে আছি। দলের জেলা সভাপতির বক্তব্যের সঙ্গে আমরাও একমত। 


যদিও পদ্মফুলের জেলা সভাপতির এই হুঙ্কার নিয়ে আশিসবাবু বলেন, বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। এখনই এ বিষয়ে কিছু বলব না। অভিজিৎবাবুও বলেন, এখনই এ নিয়ে কোনও কিছু বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। জেলায় ফিরে অবশ্যই গঙ্গাপ্রসাদবাবুর সঙ্গে কথা বলব। 


কেন বিজেপিতে গেলেন বা কুমারগ্রামে তাঁর কুশপুতুল পোড়ানো নিয়ে দশরথবাবু বলেন, শুভেন্দুদার হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছি। বাকি কথা সময় হসেই বলব। এদিকে দলের তিন নেতার বিজেপিতে যাওয়ার বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, ওঁদের সুবিধাবাদী চরিত্র মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেল। এতে আমাদের দলেরই ভালোই হল। সময় হলে মানুষ এই দলবদলকারীদের জবাব দেবে। শনিবার বারবিশার চৌপথীতে দশরথ তিরকিকে দলে নেওয়ার প্রতিবাদে কুশপুতুল দাহ বিজেপি কর্মীদের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#tmc, #Alipurduaar, #BJP West Bengal, #Dasarath Tirkey

আরো দেখুন