বাধ্যতামূলক নয়, করোনার টিকা ঐচ্ছিক
ভ্যাকসিন যে কোনও সময় আসবে ধরে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। জানা যাচ্ছে, প্রাথমিক পর্যায়ের ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচির জন্য ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করছে অর্থমন্ত্রক। প্রথম পর্যায়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে ৩০ কোটি মানুষকে। এজন্য দুই দফায় ৬৫ কোটি সিরিঞ্জ অর্ডার করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, ৭০ কোটি ভায়াল ডোজ প্রথম পর্যায়ে তৈরি করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থাগুলি। সরকার তিনটি ভ্যাকসিন নির্মাতা সংস্থার সঙ্গেই আর্থিক চুক্তি করছে। জল্পনা ছিল, ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) বাধ্যতামূলক হবে কিনা। শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, ভ্যাকসিন হবে ঐচ্ছিক। অর্থাৎ ভ্যাকসিন নিতেই হবে এরকম কোনও বাধ্যতামূলক নীতি গ্রহণ করা হবে না। তবে কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ করোনা ভ্যাকসিন কর্মসূচি প্রকল্প গ্রহণ করবে।
পাশাপাশি, সচেতনতা প্রচার কর্মসূচি নিয়েও কেন্দ্র উদ্যোগ নিচ্ছে, যাতে গোটা দেশবাসীই ভ্যাকসিন গ্রহণ করে। সরকারিভাবে ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি বেসরকারি ক্লিনিক থেকেও ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। তবে সেই ছাড়পত্র কারা পাবে, সেটা আবেদনের ভিত্তিতে হবে। আর নির্দিষ্ট মনিটরিং টিম পরিদর্শনের পরই সিদ্ধান্ত নেবে, কাদের দেওয়া হবে ভ্যাকসিন দেওয়ার ছাড়পত্র। এর কারণ, ভ্যাকসিন প্রদান কেন্দ্র হবে বিশেষ পরিকাঠামো সংবলিত।
করোনা আক্রান্ত হলে আর ভ্যাকসিন নিতে হবে না, এই ভ্রান্ত ধারণা যাতে প্রচারিত না নয় সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। সেই কারণেই স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানাচ্ছে, একবার করোনায় সংক্রামিত হয়ে সেরে গেলেও ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে। তবে সুস্থ হওয়ার ১৪ দিন পর নিতে হবে ভ্যাকসিন। সরকার যে ভ্যাকসিন সংক্রান্ত অ্যাপ চালু করছে সেখানে সচিত্র যে কোনও পরিচয়পত্র দিয়ে নাম নথিভুক্ত করাতে হবে। ভ্যাকসিন নেওয়ার সময় সেই পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। ওই নথিভুক্তিকরণের সময়ই মোবাইল নম্বর দিতে হবে। ভ্যাকসিন প্রদান শুরু হলে মেসেজ জানিয়ে দেওয়া হবে।
অর্থমন্ত্রক স্থির করেছে ১৩৫ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার জন্য ৫২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। তিন পর্যায়ে ভ্যাকসিন প্রদান এবং তার আগে ও পরে পরিকাঠামো গঠনে এই অর্থ ব্যয় করা হবে। প্রাথমিকভাবে বরাদ্দ হচ্ছে ১০ হাজার কোটি টাকা। রাজ্যগুলিকে যে কোভিড ভ্যাকসিন প্রটোকল দেওয়া হয়েছে, সেখানে এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিভ প্রসিডিওর) হিসেবে বলা হয়েছে, একটি ভ্যাকসিন সেন্টারে ৫ জন ভ্যাকসিনেশন অফিসার থাকবেন। তিনটি ঘর থাকবে। একটি সেন্টারে একদিনে ১০০ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
আশা ও মহিলা আরোগ্য সমিতির সদস্যদের ভ্যাকসিন কর্মসূচিতে কাজে লাগানো হবে। বিহার ও কেরল ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে, ওই রাজ্যগুলিতে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বিনামূল্যে। পশ্চিমবঙ্গেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানা যাচ্ছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সিরাম ইনস্টিটিউট তাদের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের ডেটা ড্রাগ কন্ট্রোলার কমিটির কাছে জমা দেবে। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যমন্ত্রক বলেছে, ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র যে কোনও সময়ই চলে আসবে। সেই কারণেই প্রস্তুতি তুঙ্গে।