অশোকনগরে গ্যাস প্রকল্পের সূচনা, ডাকই পেলেন না বিধায়ক, প্রশাসক
আজ রবিবার সকালে অশোকনগর বাইগাছিতে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। ও এন জি সি’র হাত ধরে এই প্রকল্পের সূচনা হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাটির অনুমান, রোজ এখান থেকে এক লক্ষ কিলোলিটার প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হবে।
শিল্প সম্ভাবনায় পিছিয়ে থাকা রাজ্যে যেখানে নতুন শিল্প প্রকল্পের বিরোধিতা করাটাই দস্তুর, সেখানে অশোকনগরের এই প্রকল্প শুরু হতে তেমন বেগ পেতে হয়নি। সাড়ে তিন একরের প্রকল্প এলাকায় দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে স্থানীয় শ্রমলক্ষি কলোনির বাসিন্দারা বংশানুক্রমে চাষ-আবাদ করতেন। প্রথমদিকে তাঁরা ক্ষতিপূরণে বিরোধিতা শুরু করতেই চাষিদের সঙ্গে আলোচনা করেন স্থানীয় পুরসভা এবং অশোকনগরে বিধায়ক। ও এন জি সির কর্তারাও ছিলেন। স্থানীয়দের দাবি ছিল ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের একজনের চাকরি। ও এন জি সি’র মতো বড় প্রকল্প এখানে চালু হলে দেশের তেল ও গ্যাস মানচিত্রে অশোকনগরের নাম উঠে আসবে। সামগ্রিক উন্নয়ন থেকে কর্মসংস্থানের সুযোগ আসবে। এই প্রতিশ্রুতির পর বিরোধিতার রাস্তা থেকে সরে আসেন স্থানীয় চাষী পরিবারের মানুষজন। তাই তৈল উত্তোলনের পর প্রকল্প শুরুর সম্ভাবনা তৈরি হতে সেভাবে জঙ্গি বিরোধিতার পথে না গিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের একজনের চাকরির আবেদন করেছেন কর্তৃপক্ষের কাছে। এদিকে এলাকা উন্নয়নের লক্ষ্যে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করলেও, শনিবার বিকেল পর্যন্ত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণই পেলেন না স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক ও পুর প্রশাসক। অশোকনগরের বিধায়ক ধিমান রায় বলেন, প্রকল্পের শুরুতে জমি পাওয়ার সমস্যা হওয়ায় ও এন জি সি কর্তৃপক্ষ আমার কাছে আসতেন। স্থানীয় পুরসভা, বিধায়ক হিসেবে আমি এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে বৈঠকের পর তাঁরা জমি পেয়ে যান। কাজও শুরু হয়। কিন্তু তারপর আর যোগাযোগ করেননি। রবিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আসবেন শুনেছি। কিন্তু শনিবার বিকেল পর্যন্ত আমন্ত্রণ আসেনি। তবুও চাই অশোকনগরের সার্বিক উন্নয়ন হোক।
স্থানীয় পুর প্রশাসক প্রবোধ সরকার বলেন, ও এন জি সি কর্তৃপক্ষ আমন্ত্রণ জানায়নি। প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার জমির ব্যবস্থা করেছে। সব রকমের সাহায্য করেছি। আমরা প্রকল্পের বিরোধিতা করব না। এদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আসার খবর হতেই স্থানীয় চাষিরা আশায় বুক বেঁধে রয়েছেন। স্থানীয় চাষি বিপুল মণ্ডল বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে আমরা স্বাগতই জানাব। আমরা এই প্রকল্পের হাত ধরে অশোকনগরের উন্নয়নের পক্ষেই। প্রকল্প এলাকার কৃষকদের প্রতিনিধি গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে ক্ষতিপূরণ এবং চাকরির আবেদনের জন্যই তালিকা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, অশোকনগর বাইগাছি মৌজার মাটির নিচ থেকে নভেম্বরের গোড়ায় ২০ কিলোলিটার অপরিশোধিত তেল উত্তোলন করা হয়। সেই তেল পরীক্ষার জন্য হলদিয়ার পরিশোধনাগারে পাঠানোও হয়েছিল। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনের তোড়জোড় শুরু হয়।