রাজ্যে ফের শ্রমদিবস বাড়াতে বাধ্য হল কেন্দ্র
রাজ্যে একশো দিনের কাজে ফের শ্রমদিবস বাড়াতে বাধ্য হল মোদি সরকার (Modi Government)। এই নিয়ে তিনবার। পুজোর আগে ও পরে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে অতিরিক্ত শ্রমদিবস ছিনিয়ে এনেছিল রাজ্য। সেই বাড়তি কাজও দ্রুত সম্পূর্ণ করেছে পঞ্চায়েত দপ্তর। আর্থিক বছর শেষ হতে এখনও প্রায় সাড়ে তিনমাস বাকি। তার আগেই টার্গেট পূরণ করায় মিলল পুরস্কার, আরও শ্রমদিবস (Labour Day)। এমন নজির অতীতে কবে হয়েছে, মনে করতে পারছেন না সরকারি আধিকারিকরা। বাংলার এই ঈর্ষণীয় সাফল্যের কাছে হার মেনেছে অন্যান্য রাজ্যগুলিও।
চলতি আর্থিক বছরের শুরুতে পশ্চিমবঙ্গে মোট ২২ কোটি শ্রমদিবস তৈরির ব্যয়বরাদ্দ ধার্য করে কেন্দ্র। কিন্তু মার্চের শেষ সপ্তাহে কোভিডের বাড়বাড়ন্ত নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে লকডাউন জারি হয়। সব ধরনের কাজকর্ম লাটে ওঠে। ভিন রাজ্যে কাজ হারিয়ে বাড়ি ফেরেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। তাঁদের রুজি-রুটির প্রশ্নে সদর্থক উদ্যোগ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরই নির্দেশে লকডাউনের মধ্যেই একশো দিনের কাজ শুরু করে পঞ্চায়েত দপ্তর। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে সে সময় কম বিতর্ক হয়নি। সমালোচনায় সরব হয়েছিল বিরোধীরা। কিন্তু পিছু হটেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চূড়ান্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই একের পর উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে একশো দিনের প্রকল্পে। হাতেনাতে ফল মিলেছে মূলত দু’টি পর্যায়ে। এক, লকডাউনের ধাক্কা সামলে রাজ্যে অর্থনীতির চাকা দ্রুত ঘুরতে শুরু করে। দুই, গ্রামের রাস্তাঘাট নির্মাণ, সেচখাল তৈরি, পানীয় জলের বন্দোবস্ত করা, বনসৃজন সহ একাধিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গতি আসে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে বেগ পেতে হয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারকে।
২২ কোটি শ্রমদিবস তৈরির টার্গেট সম্পূর্ণ হয় মাত্র ছ’মাসেই। তা বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবি জানায় রাজ্য। দাবি মেনে আরও ৬ কোটি বাড়ানো হয় শ্রমদিবস। সেই লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হয়ে যায় পুজোর আগে। তারপর কেন্দ্রের তরফে নতুন করে ৪ কোটি, অর্থাৎ মোট ৩১ কোটি শ্রমদিবস তৈরির ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সেই লক্ষ্যও ছুঁয়ে ফেলেছে বাংলা। এবার শ্রমদিবসের সংখ্যা আরও ১০ কোটি বাড়ানোর দাবি তুলেছিল রাজ্য। কিন্তু কেন্দ্র অনুমোদন দিয়েছে মোট ৩৬ কোটির। হাতে সময় রয়েছে প্রায় সাড়ে তিনমাস। তার উপর রয়েছে ভোট-বিধির খাঁড়া। ফলে বাড়তি ৫ কোটি শ্রমদিবসের লক্ষ্য পূরণ করতে দ্রুত কাজ করতে হবে। তাই গ্রামোন্নয়নে নিত্যনতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে শুরু করেছে পঞ্চায়েত দপ্তর।