অশোকনগরে গ্যাস প্রকল্পের উদ্বোধনের দিনে চাষিদের বিক্ষোভ
অশোকনগরে তেল ও গ্যাস প্রকল্পের উদ্বোধনের দিন উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও চাকরির দাবিতে অশোকনগরে বিক্ষোভ দেখালেন চাষিরা। তবে তাঁদের প্রকল্প এলাকার দিকে যেতে দেয়নি স্থানীয় পুলিস ও প্রশাসন। একইভাবে বাম কাউন্সিলারদের প্রতিনিধি দলকেও পুলিস আটকে দেয়। যদিও চাষিরা জানিয়েছেন, তাঁরা এই প্রকল্প হোক চান। কিন্তু তাঁদের চাকরি ও ক্ষতিপূরণ না দেওয়া হলে অচিরে তাঁরা চরম দুর্গতিতে পড়বেন। যদিও এদিন প্রকল্প উদ্বোধনে আসা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান (Dharmendra Pradhan) আশ্বাস দিয়েছেন, চাকরিতে স্থানীয় মানুষজনই অগ্রাধিকার পাবেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অশোকনগরের বাইগাছি মৌজায় তেল ও গ্যাস প্রকল্পের বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনের প্রক্রিয়া রবিবার থেকে শুরু করেছে ওএনজিসি। কিন্তু ওই প্রকল্প যে জমিতে হচ্ছে তা রাজ্য সরকারের খাস জমি। আজ থেকে ৭০ বছর আগে ওই জমি জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুরা শ্রমলক্ষ্মী কলোনি গড়েন। তাঁরা স্থানীয় প্রশাসনের মৌখিক অনুমতি নিয়ে জঙ্গল পরিষ্কার করে চাষ শুরু করেন। এরপর থেকে তাঁরা ওই জমিতে চাষ করে সংসার চালাচ্ছিলেন। ওএনজিসি ওই জমিতে পর্যাপ্ত তেল ও গ্যাস খুঁজে পাওয়ার পর রাজ্য সরকারের কাছে জমি চায়। প্রথম দফায় প্রায় সাড়ে তিন একর জমি রাজ্য সরকার ওএনজিসিকে দেয়। এর ফলে কয়েকশো চাষিকে ওই জমি থেকে সরে যেতে হয়েছে। অনেক চাষি কর্মহীন হয়েছেন। রাজ্যের কাছে নতুন করে আরও প্রায় ১৫ একর জমি চেয়েছে ওএনজিসি। ওই জমি অধিগ্রহণ করা হলে আরও অনেক চাষি কর্মহীন হবেন। তাই উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও চাকরির দাবিতে চাষিরা কৃষক কল্যাণ সমিতি তৈরি করেছেন। ইতিমধ্যেই কৃষকদের দাবিকে তৃণমূলের পাশাপাশি বাম ও অতি বাম সংগঠনের সদস্যরা সমর্থন জানিয়েছেন। তবে সকলেই চান প্রকল্প চালু হোক।
রবিবার সকালে উদ্বোধনের খবর পেয়ে শ্রমলক্ষ্মী কলোনির বাসিন্দারা
প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে জড়ো হন। তাঁরা মিছিল করে প্রকল্প লাগোয়া গোলমাঠে যেতেই পুলিস তাঁদের আটকে দেয়। একইভাবে অশোকনগর পুরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএম কাউন্সিলার চিত্তরঞ্জন বিশ্বাসের নেতৃত্বে কাউন্সিলারের প্রতিনিধি দল মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার জন্য এলে তাদেরও আটকে দেওয়া হয়। কৃষক কল্যাণ কমিটির তরফে চিত্তরঞ্জন শিকদার বলেন, আমরা চাই এই প্রকল্প হোক। কিন্তু আমাদের বিষয়টি দেখা হোক। আমরা ৭০ বছর ধরে এই জমিতে চাষ করে সংসার চালাচ্ছি। আমাদের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও চাকরি না পেলে আমাদের অনাহারে মরতে হবে। এদিন আমরা সরাসরি মন্ত্রীর হাতে স্মারকলিপি দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিস আটকে দিল। কী হবে আমরা বুঝতে পারছি না।