ক্রিসমাস ক্যারল চেনায় মিরপুরের পর্তুগিজ গ্রাম
বাবা পর্তুগিজ আর মা বাঙালি। বংশ পরম্পরায় ১২জন পর্তুগিজ গোলন্দাজের সেই রক্ত বহন করেই ১৫০ পরিবারের ‘ফিরিঙ্গি পাড়া’ মহিষাদলের মিরপুর। জাতিসত্ত্বায় ভারতীয় হলেও শুধুমাত্র চার্চের ঘণ্টায় এই পাড়ার মানুষজন খুঁজে পান তাদের আলাদা পরিচিতি। শুধু এটুকুই পৃথক সংস্কৃতি। আর তা না হলে রোজারিও, পেড্রা, টেসরা, নুনিশ, লোবো, রথা, ডি’ক্রুজ, গোমেজ পদবিগুলোর সঙ্গে নেই আর কোনও বিদেশি সংস্কৃতির ছোঁয়া। পর্তুগিজদের রক্তে ক্রমেই মিশেছে বাঙালিয়ানা।
বাংলা ভাষা, সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে পড়েছেন তারা। গেরস্থের এক উঠোনে গড়ে উটেছে তুলসী আর মা মেরির ছোট মন্দির। খ্রিস্টধর্মের বিভিন্ন অনুষঙ্গের পাশাপাশি তারাও মেতে ওঠেন বাঙালির বারো মাসের তেরো পার্বণে। জাতীয় পোশাক স্কার্ট বা র্যাপার ছেড়ে এ পাড়ার বধূরা থাকেন শাড়ি, সিঁদুর, শাঁখা–পলার বাঙালি সাজে। এই সাজপোশাকেই চার্চে গিয়ে প্রার্থনাও করেন তারা। এ সবের মাঝে আসে বড়দিন। যীশু বন্দনায় মেতে ওঠে মিরপুরের পর্তুগিজ গ্রাম। ‘জিঙ্গল বেলস জিঙ্গল বেলস’ ক্রিসমাস ক্যারলের সুরে ফুটে ওঠে খানিক বিদেশি সংস্কৃতি।
মঙ্গলবার রাত ১২টার পরই সূচনা হবে ‘খ্রিস্টের জাগরণ’ উৎসব। এবারও বড়দিন উদযাপনের যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে মিরপুরের ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্টদের দুই গির্জায়। মিরপুরের বাসিন্দা জোসেফ উইলিয়াম রথার, রতন তেসরারা বলেন, ‘বড়দিন আমাদের কাছে শ্রেষ্ঠ উৎসব। বড়দিনের উৎসবে কেকের পাশাপাশি নানা রকম কুকিজ, ডোনাটও ঘরে বানিয়ে বিতরণ করা হয়।’