জাতিয়তাবাদ নয়, আন্তর্জাতিকতাই মূল রবীন্দ্রনাথের মূল মন্ত্র: ব্রাত্য
আজ তৃণমূল ভবনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে বোলপুরে প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi) ভার্চুয়াল বক্তৃতাকে তীব্র কটাক্ষ করলেন তৃণমূল বিধায়ক ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। নাম না করে অমিত শাহের বোলপুর পদযাত্রাকে নিশানা করে ব্রাত্যবাবু জানান “২৯ শে ডিসেম্বর বোলপুরে আমাদের দলীয় কর্মসূচী রয়েছে। জিপে হাত নাড়তে নাড়তে নয়। পায়ে হেঁটে মিছিল করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)”।
প্রধানমন্ত্রীর বাংলার প্রতি আকস্মিক দরদকে কটাক্ষ করে নেতা বলেন, “আজ প্রধানমন্ত্রী এতোবার রবীন্দ্রনাথের নাম দিলেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের মেজদা সত্যান্দ্রনাথকে আগাগোড়া বলে গেলেন বড়দা। স্ত্রীকে বলে গেলেন জ্ঞ্যানন্দিনী। আসল নাম ছিল জ্ঞানদা নন্দিনী”।
প্রধানমন্ত্রীর বার বার গুজরাট শব্দের ব্যবহারে সন্দেহ প্রকাশ করে ব্রাত্য বাবু বলেন, “ভারতের প্রাধানমন্ত্রী গুজরাটের সাথে রবীন্দ্রনাথকে জড়াতে এতো উৎসাহী কেন? রবীন্দ্রনাথ বিশ্ব কবি। তাঁকে আঞ্চলিক জায়গার বাঁধার এই চেষ্ঠা কেন?”
তিনি আরো বলেন, “উনি বলেছেন জ্ঞানদানন্দিনী গুজারাটি রমণীদের কাছ থেকে বিশেষ ভাবে শাড়ি পরা শিখেছিলেন। কিন্তু আসল কথা গুজরাটি এবং পার্সি দুইয়ের কাছ থেকেই শিখেছিলেন শাড়ি পরা। পার্সি রমনীদের নাম নিলে কি ওনার জাতীয়তাবাদে আটকাবে”?
এদিন বিধায়ক দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “স্বাধীনতা সংগ্রামে কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান আছে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী দিল্লি থেকে লাহোর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম তুলে আনলেন। কিন্তু ভারতবর্ষের প্রথম কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা উচ্চারণ করলেন না। যার অধীনে একদিন দেশের সমস্ত কলেজ ছিল। জাতীয় শিক্ষা পরিষদ থেকে তৈরি হওয়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নেবেন না?”
বিধায়ক আরো বলেন, “আজ কবির, তুকারামের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এদের সাহিত্যের জন্মই ব্রাম্ভন্যবাদী সংস্কৃতির বিরোধীতা করে। তুকারাম যদি এক আদর্শের সাহিত্যিক মুখ হয়ে থাকেন, তাহলে তার রাজনৈতিক মুখ আম্বেদকার”।
তিনি প্রশ্ন করেন, হাথরাস, দলিতদের নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর মুখে একটাও কথা শোনা যায় না কেন?
ব্রাত্যবাবু এদিন তুলে আনেন রবীন্দ্রনাথের গোড়া, পরেশ রাওয়ালের সিনেমার উদাহরণ। বলেন জাতীয়তাবাদ নয় আন্তর্জাতিক হওয়াই মূল কথা।
তিনি বলেন, “রবীন্দ্রনাথ বলেছেন জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে ভালোবাসতে হবে। একই কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে সেই কারণে বিজেপির আইটি সেলের কুমন্তব্যের শিকার হতে হয়। আমার বিশ্বাস রবীন্দ্রনাথ বেঁচে থাকলে তাঁকেও হতে হত”।
উইলিয়াম চার্চিলের একটি কথা দিয়ে শেষ করেন বিধায়ক। বলেন, “একজন নেতা পরের ইলেকশান নিয়ে ভাবেন। একজন রাষ্ট্রনেতা পরের প্রজন্ম নিয়ে ভাবেন। দুয়ারে সরকার প্রকল্পে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাই করেছেন। তিনি তাতে কোন জাতি ধর্ম ভেদাভেদ করেন নি”।