দলনেত্রীর অনুমতি পেলে শুভেন্দু যে আসনে, সেখানেই দাঁড়াব, জামানত জব্দ করে ছাড়ব! চ্যালেঞ্জ সুজাতার
সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য দলের বিরুদ্ধে সরব। নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) তৃণমূল ছেড়েছেন।
বৃহস্পতিবার কাঁথির সভা থেকে শুভেন্দু যখন তৃণমূলের উদ্দেশে একের পর এক তীক্ষ্ণ বাক্যবাণ ছুঁড়ছেন, তখন পূর্বস্থলীর সভা থেকে, শুভেন্দুর উদ্দেশে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া সুজাতা মণ্ডল খাঁ, যিনি শুভেন্দুরই দলের সাংসদ সৌমিত্র খাঁর (Soumitra Khan) স্ত্রী। আর তাঁর স্ত্রী যখন শুভেন্দুর দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ছেন, তখন সৌমিত্র আবার রোড শোতে আগাগোড়া দাঁড়িয়ে ছিলেন শুভেন্দুর এক্কেবারে পাশে।
কাঁথি থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী। কয়েকদিন আগে পূর্বস্থলী থেকেই তৃণমূলকে উৎখা তের ডাক দেন শুভেন্দু । আর সেখান থেকেই আজ শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়েন সুজাতা। শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘‘পার্টিকে বলব, আমাকে এমএলএ টিকিট দেওয়ার দরকার নেই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬ ঘণ্টা খাটব। যেখানে বলবে, সেখানে যাব। এদের ( তৃণমূল) বিসর্জন দিতে, যা করার করব।পরিবর্তনের পরিবর্তন চাই বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাঁকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে সুজাতার ঘোষণা, যে কোনও আসনে শুভেন্দু দাঁড়ান, দলনেত্রীর অনুমতি পেলে সেখানেই দাঁড়াব। জামানত জব্দ করে ছাড়ব। না দাঁড়ালে ভাবব ভয় পেয়েছে!
পূর্বস্থলীতে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারের কাজ নিয়ে আক্রমণ করেছিলেন শুভেন্দু বলেছিলেন, আজ যমের দুয়ারে সরকার। এরা সব সব স্থায়ী চাকরি তুলে দিয়েছে। ২০১৪ থেকে এসএসসি বন্ধ। টেটে কেলেঙ্কারি। গোটা বাংলায় দু’কোটি বেকার।’’ এদিন একই জায়গায় দাঁড়িয়ে পাল্টা সুজাতা খাঁর দাবি, মমতা যা করেছেন, তাতে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসবেন তিনিই।
যাঁদের আত্মসম্মান আছে তাঁরা তৃণমূল করতে পারেন না বলে পূর্বস্থলীতে মন্তব্য করেছিলেন শুভেন্দু। তিনি বলেছিলেন, এই দলটা প্রাইভেট কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। দেড় জন মিলে চালাচ্ছে। যাঁদের আত্মসম্মান আছে, তাঁরা তৃণমূল করতে পারেন না। তাই আমি বেরিয়ে এসেছি।
পাল্টা বিজেপি থেকে তৃণমূলে (Trinamool Congress) যোগদানকারী সুজাতার দাবি, বিজেপিতে দলিতদের, মহিলাদের কোনও সম্মান নেই। আমি সম্মান পাইনি। আমাকে সীতার অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছে।
গত শনিবার অমিত শাহের (Amit Shah) উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু। এর দু’দিন পর সোমবারই তৃণমূলে যোগ দেন সুজাতা। এরপরই লাইভ সাংবাদিক বৈঠক থেকে চোখের জল মুছতে মুছতে স্ত্রীকে ডিভোর্স নোটিস পাঠানোর কথা ঘোষণা করেন সৌমিত্র। বৃহস্পতিবার পূর্বস্থলী থেকে বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে সৌমিত্রর উদ্দেশে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে সুজাতা বলেন, যেদিন আমার স্বামী দলত্যাগ করেছিল, সেদিন তাঁকে ডিভোর্স দিইনি। সেদিন আমি বুক চিতিয়ে লড়েছি। পায়ে সেপ্টিক হয়েছিল। তাও সাংসদ করে দিয়েছি।
এই প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে, ভবিষ্যতে কোনও ভোটে কি সৌমিত্র এবং সুজাতাকে (Sujata Mondal) মুখোমুখি লড়াইয়ে দেখা যেতে পারে? সুজাতা অবশ্য় আপাততঃ সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিয়ে বলেছেন,পারিবারিক বিষয়ে লড়াই লাগাতে চান। আমি বলব না।