জুনের ‘স্থগিত’ বিল ১০ কিস্তিতে নেবে সিইএসসি
গত জুন মাসে সিইএসসির(CESC) আওতায় থাকা কলকাতা (Kolkata)ও শহরতলির গ্রাহকরা যে বিল মিটিয়েছেন, তা বাস্তব বিদ্যুৎ বিলের তুলনায় কম ছিল। এমনটাই জানিয়েছিল সিইএসসি কর্তৃপক্ষ। সেই সময় যেটুকু টাকা কম মিটিয়েছেন গ্রাহক, তা আগামী দশ মাসে ১০টি কিস্তিতে আদায় করবে তারা। ফলে আগামী মাসগুলিতে সাধারণ মানুষের বিদ্যুৎ বিলের বোঝা বাড়তে চলেছে।
গত জুন মাসের বিল নিয়ে ক্ষোভ জমেছিল সিইএসসির গ্রাহকদের মধ্যে। একসঙ্গে অনেক টাকা বিল আসায় সমস্যায় পড়েছিলেন বহু গ্রাহক। ক্ষোভ সামাল দিতে আসরে নামতে হয় বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কেও(Sobhandeb Chatterjee)।
পরিস্থিতি সামাল দিতে জুন মাসের বিলের নতুন ফর্মুলা ঘোষণা করে সিইএসসি কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, লকডাউন(Lockdown) শুরু হওয়ার আগে শেষবার যে মিটার রিডিং (Meter Reading)নেওয়া হয়েছিল, এবং লকডাউন শেষ হবার পর জুন(June) মাসে যে মিটার রিডিং নেওয়া হয়, এর যে পার্থক্য, তাকে মধ্যের মাসের সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হবে। ভাগফল যা হবে, সেই ইউনিটের বিদ্যুতের দাম জুন মাসের জন্য চোকাবেন গ্রাহক। নতুন করে গ্রাহকের কাছে যে বিল পাঠানো হবে, তাতে এই সংক্রান্ত বিষয়টি স্পষ্ট থাকবে বলেই সেই সময় জানায় সিইএসসি কর্তৃপক্ষ। তবে লকডাউন চলাকালীন মিটার রিডিং না হওয়ায় যে গড় বিল পাঠিয়েছিল সিইএসসি, তাতে স্বাভাবিক বিল যা হওয়ার কথা, তার থেকে কম টাকা নেওয়া হয়েছিল বলেই দাবি এই সংস্থার। তাদের যুক্তি ছিল, যে বিল পাঠানো হচ্ছে, তা আসলে শীতকালের সময়ের বিলের গড় অঙ্ক। বাস্তবে এপ্রিল বা মে মাসের গরমে বিল আরও বেশি হয়।
সিইএসসি জানায়, যে টাকা কম নেওয়া হয়েছিল, সেই টাকার ব্যাপারে আপাতত সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখছে তারা। পরবর্তীকালে সেই বিষয়ে জানানো হবে গ্রাহককে। বৃহস্পতিবার সেই সিদ্ধান্ত জানাল সিইএসসি। সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডিস্ট্রিবিউশন) অভিজিৎ ঘোষ বলেন, সে সময় যে টাকা আমরা গ্রাহকের থেকে কম নিয়েছিলাম, তা দশটি কিস্তিতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গ্রাহক নভেম্বর(November) মাসের জন্য যে বিল পাবেন, তার সঙ্গে প্রথম কিস্তির টাকা যোগ হবে। পরপর দশ মাস এভাবেই কিস্তির টাকা মেটাবেন গ্রাহক। যাতে তাঁদের উপর কোন ভাবেই আর্থিক চাপ না পড়ে, সেই কারণেই আমরা দশটি কিস্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সিইএসসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গ্রাহকরা বিদ্যুৎ বিল মেটাতে গিয়ে ইউনিট স্ল্যাবের সুবিধা পান। অর্থাৎ কম ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার হলে ইউনিট পিছু দাম কম হয়। বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়লে ইউনিট পিছু দাম বাড়ে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই কিস্তির টাকা বিলে যোগ হলেও, তার সঙ্গে ওই স্ল্যাবের কোনও সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ এই কিস্তি গ্রাহককে উপরে স্ল্যাবে নিয়ে যেতে কোনও ভাবে সাহায্য করবে না। এ মাসে গ্রাহক অক্টোবর মাসের বিল মিটিয়েছেন। এই মাসেরই শেষ থেকে নভেম্বরের বিল গ্রাহকের কাছে পৌঁছবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সিইএসসির এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করছে অল বেঙ্গল ইলেকট্রিসিটি কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের দাবি, ওই ‘স্থগিত’ রাখা বিলটি মকুব করতে হবে সিইএসসি কর্তৃপক্ষকে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রদ্যুৎ চৌধুরী বলেন, আমরা গোড়া থেকেই আশঙ্কা করে আসছিলাম, আজ না হলে কাল গ্রাহকের কাছে ওই বিলের বোঝা চাপাবে সিইএসসি।