পিএম কেয়ার্স ফান্ড আরটিআই-এর আওতায় আসবে না কেন, প্রশ্ন তৃণমূলের
পিএম কেয়ার্স তহবিল নিয়ে ফের বিভ্রান্তি ছড়াল কেন্দ্রের তথ্য। কোভিডের জন্য তৈরি হওয়া পিএম কেয়ার্স ফান্ড নিয়ে এবার সুর চড়ালো তৃণমূল (AITC)। তৃণমূলের সংসদীয় দলের জাতীয় মুখপাত্র ও মুখ্যসচেতক সুখেন্দু শেখর রায় (Sukhendu Sekhar Roy) পিএম কেয়ার্স ফান্ড (PM Cares Fund) নিয়ে পাঁচ দফা প্রশ্ন তুলেছেন। সঙ্গে ৩ দফা দাবিও জানানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে। ফান্ডের গঠন, আয়-ব্যায়ের সূত্র ও পরিমাণ নিয়ে সিএজি তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পিএম কেয়ার্স ফান্ডকে অ্যাটাচ করা হোক, নয়তো ট্রাস্ট ভেঙে সরকার সমস্ত টাকা বাজেয়াপ্ত করুক, দাবি তুলেছেন সুখেন্দুশেখর রায়। কোভিডকালে মোদী সরকারের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
বিবৃতিতে সুখেন্দু শেখর রায় যে প্রশ্ন গুলি তুলেছেন – ১। সরকার প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দেশের মানুষকে পিএম কেয়ার্স ফান্ডের মেমোরেন্ডাম অফ ট্রাস্টের দলিলের নির্দিষ্ট অংশ সামনে আনুক, বলুক এটা বক কচ্ছপ না বকচ্ছপ? ২। পিএম কেয়ার্স ফান্ড আরটিআই-এর আওতায় আসবে না কেন? মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, সরকারি কর্মীরা কর্মক্ষেত্রে বার্ষিক আয় ব্যয়ের হিসেব দেবেন, আর প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বাধীন ট্রাস্ট দেবে না? ৩। সরকারি বয়ানে বলা হয়েছে বিভিন্ন দেশ-বিদেশের সংস্থা, এনআরআই ব্যক্তিরা পিএম কেয়ার্স ফান্ডে দান করেছে? কারা দান করেছে? দানের বিনিময়ে তারা কী কী সরকারি সুবিধে পেয়েছেন? ৪। এনআরআই ও বিদেশি সংস্থার দান সংগ্রহ করতে বিদেশের সমস্ত ভারতীয় দূতাবাসকে কাজে লাগানো হয়েছে কি? দুবাই ও চীনের সংস্থাও কি টাকা দান করেছে? ৫। ২৭ মার্চ তৈরি হওয়া ট্রাস্টের দলিল বলছে, এতে কোনও সরকার বা সরকারি সংস্থার বিনিয়োগ নেই। আবার ২৮ মার্চ কেন্দ্রের কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রক মেমো জারি করে বলছে, আইন অনুযায়ী এই ফান্ডে সরকারি সংস্থা কল্যাণমূলক কাজে দান নিতে পারে। কোনটা ঠিক?
উল্লেখ্য, গতকাল তথ্যের অধিকার আইনে আবেদনের প্রেক্ষিতে মোদী সরকার জানায়, কোভিড দান নেওয়ার জন্য পিএম কেয়ারস তহবিল গঠন করে সরকার। সরকারই তহবিলের নিয়ন্ত্রক। তবে আরটিআই-র আওতায় পড়বে না। এখানেই প্রশ্ন তোলা হয়, সরকারি সংস্থা অথচ তথ্য জানার অধিকার আইনভূক্ত নয়?
আরটিআই আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল কেন্দ্র জানায়, ‘পিএম কেয়ারস তহবিল নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার। ভারত সরকার এটি প্রতিষ্ঠা করেছে। তবে তথ্য জানার অধিকার আইনের আওতায় নেই। কারণ তহবিলে ব্যক্তিগত অর্থ নেওয়া হয়েছে।’ বিভিন্ন ব্যক্তি, সংস্থা, কর্পোরেট, বিদেশি নাগরিক, বিদেশি সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কাছ থেকে অর্থ এসেছে পিএম কেয়ার্সে। কোনও সরকারি সংস্থার থেকে টাকা আসেনি। সংস্থার পরিচালনে ট্রাস্টি থাকায় তথ্য জানার অধিকার আইনের ২(এইচ) ধারা অনুযায়ী, পিএম কেয়ার্স আরটিআই ভূক্ত নয়। ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠান বলা যাবে না। স্বাভাবিকভাবে পিএম কেয়ার্স নিয়ে অস্পষ্টতা বাড়ছে। পিএম কেয়ার্স ট্রাস্ট রেজিস্ট্রার করা হয়েছে দিল্লীর রেভিনিউ বিভাগে। প্রধানমন্ত্রী চেয়ারপার্সন ও একাধিক মন্ত্রী ট্রাস্টি। কিন্তু পিএম কেয়ার্স ওয়েবসাইট সম্প্রতি জানায়, পিএম কেয়ারস ফান্ড সরকারি সংস্থা নয়।