প্রতীচী-কাণ্ডে এ বার পথে নামলেন বুদ্ধিজীবীরা
রবিবার বিকেলের দিকে অ্যাকাডেমি চত্বরে এক প্রতিবাদসভার আয়োজন হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জয় গোস্বামী, সুবোধ সরকার, শুভাপ্রসন্ন, কবীর সুমন প্রমুখ। সকলেই অমর্ত্য সেনের অপমানের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন।
অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র সীমানায় বিশ্বভারতীর জমিও ঢুকে গিয়েছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সহমত হননি স্বয়ং অমর্ত্য। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর কাছে জমির বৈধ কাগজপত্র আছে। কিন্তু তাঁর মতামতকে আমল না দিয়েই বঙ্গ বিজেপি’র পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি বাঁকাচোরা মন্তব্য করা হয়েছে।
এ নিয়ে মমতা ব্যানার্জী তাঁর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এবং অমর্ত্য সেনকে চিঠি লিখে তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। চিঠিতে মমতা অমর্ত্যকে অনুরোধ করেছেন তাঁকে ‘বোন’ ও ‘বন্ধু’ মনে করতে।
রবিবার মমতার প্রতিবাদেরই সূত্রেই ব্রাত্য বসুর নেতৃত্বে বিষয়টি নিয়ে বাংলা অ্যাকাডেমি চত্বরে প্রতিবাদসভা আয়োজিত হল। সেখানে প্রত্যেকেই তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন। কবি সুবোধ সরকার বলেন, ‘অমর্ত্য সেনকে যে এভাবে অপমান করা যায় সেটাই ভাবা যায় না! তিনি বিশ্বভারতীর জমি দখল করেছেন বলে যে-অপবাদ তাঁকে দেওয়া হচ্ছে, তার প্রতিবাদেই আমরা জড়ো হয়েছি।’
কবি ও গদ্যকার জয় গোস্বামী বলেন, ‘অমর্ত্য সেনের সঙ্গে যা করা হয়েছে তা কেন্দ্রীয় সরকারের স্বৈরাচারী স্বেচ্ছাচারিতার পরিচয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্বভারতী ও কেন্দ্রীয় সরকার যে পদক্ষেপ করেছে আমি তার সর্বাঙ্গীণ বিরোধিতা করি ও ধিক্কার জানাই।’
বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব ও রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘বিজেপি বরাবরই বুদ্ধিজীবীদের শত্রু মনে করে। কারও রাজনীতির বিরোধী হলেই কি তাঁর ভিটেমাটি চাঁটি করে দিতে হবে? অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়ানোর যে বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী দিয়েছেন, এখানে প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা তাকেই মান্যতা দিলাম।’
শিল্পী শুভাপ্রসন্ন বলেন, ‘অমর্ত্য সেনের অপমান মানে সমগ্র বাঙালি জাতির অপমান।’
সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন বলেন, ‘অমর্ত্যবাবু বরাবর প্রতিষ্ঠানবিরোধী। ফলে তাঁর ওপর বিজেপির রাগ হওয়ারই কথা। তবে আমরা বিষয়টি ছেড়ে দেব না।’