কাজের মাঝেই ছুটি কাটান এই ‘ওয়ার্কেশন’ ডেস্টিনেশনগুলিতে
অফিসে আগে ঘাড়ে মাথা গুজে কাজ করতে হত, আজকাল মুখে মাস্ক গুজে কাজ করতে হয়। WFH অর্থাৎ বাড়ি থেকে কাজ করা মানে ল্যাপটপের সামনে ঠায় বসে থাকা কিংবা ছাদে গিয়ে পাঁচ মিনিটের ব্রেকে টুকরো আকাশ দেখা।
আচ্ছা! ল্যাপটপ থেকে মাথা তুললেই যদি সামনে বরফে ঢাকা পাহাড় দেখতে পান, কিংবা ঘন নীল সমুদ্রের ডাক ক্রমাগত কানে এসে আছড়ে পড়ে! ভাবছেন, এও কি সম্ভব? হ্যাঁ, সম্ভব। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য প্রচলিত হয়েছে নতুন একটি ব্যবস্থা। ওয়ার্কেশন (Workation)।
কী এই ‘ওয়ার্কেশন’?
ইংরাজি শব্দ ‘ওয়ার্ক’ ও ‘ভ্যাকেশন’ মিলে তৈরি হয়েছে এই শব্দ। অর্থাৎ কাজও হবে, আবার ছুটির আনন্দও চুটিয়ে উপভোগ করতে পারবেন। যেটুকু সময় প্রয়োজন কাজ সেরে নিলেন, বাকি সময় নিজেকে প্রকৃতির কোলে অনায়াসে সঁপে দিতে পারবেন। ভারতবর্ষে বেশ কয়েকটি জায়গায় এই ওয়ার্কেশনের সুবিধা রয়েছে।
বীর
হিমাচল প্রদেশের বীর (Bir) পাহাড়ের কোলে অবস্থিত ছোট্ট এক গ্রাম। প্যারাগ্লাইডিং যাঁরা করতে ভালবাসেন, তাঁদের জন্য একদম আদর্শ জায়গা। তিব্বতের সংস্কৃতির ছোঁয়া এখানকার জীবনযাপনে পাবেন। পাঠানকোট রেল স্টেশনে নেমে কিংবা কাংড়া বিমানবন্দরে নেমে চলে যেতে পারেন। চাইলে খোলা আকাশের নিচে সবুজের চাদরে বসে কাজ করতেই পারেন নির্বিঘ্নে। যাওয়ার সেরা সময় অক্টোবর থেকে জুন মাস।
ভারকালা
পাহাড় ও সমুদ্রের যুগলবন্দির কথা বললেই বেশিরভাগ মানুষের গোয়ার কথা মনে পড়ে। তবে এই দুইয়ের স্বাদই পাবেন কেরলের ভারকালায় (Varkala)। ভালবেসে এই জায়গাকে ‘পার্ল অফ আরেবিয়ান সি’-ও বলে থাকেন অনেকে। তিরুবনন্তপুরম রেল স্টেশন ও বিমানবন্দর থেকে যাওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা রয়েছে। আর কাজের ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কেরও কোনও সমস্যা হবে না। অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত বেড়ানোর মরশুম।
মাসিনাগুড়ি
এবার আসা যাক ঘন বনের সাম্রাজ্যে। মাসিনাগুড়ি (Masinagudi)। তামিলনাড়ু, কেরল, কর্ণাটক তিন রাজ্যজুড়ে এই বনাঞ্চল। শহরের কোলাহল থেকে দূরে নিভৃতে কাজে মনোনিবেশ করার আদর্শ জায়গা। ভাগ্য ভাল থাকলে বন্যদের দেখাও পেতে পারেন। কাছের রেল স্টেশন ও বিমানবন্দর কোয়েম্বাটোর।
মাথেরান
মায়ানগরী মুম্বইয়ের পাশেই রয়েছে মাথেরান (Matheran)। আরব সাগরের তীরের অন্যতম জনপ্রিয় ‘ওয়ার্কেশন’ সবুজ পাহাড়ের এই সাম্রাজ্য। কাজ না থাকলেও অনেকে উইকএন্ড কাটাতে চলে যান। লং ড্রাইভে বেরিয়ে পড়েন। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর অর্থাৎ এই শীতই মাথেরান বেড়ানোর সেরা সময়।
খিমসর
মরুভূমিতে নাকি কাজ হয় না? কে বলেছে! একবার জোধপুরের কাছে খিমসরে (Khimsar) গিয়ে দেখুন তো। সৃষ্টিশীল মানুষদের এই জায়গাটি বড় প্রিয়। শীতল বালিতে গা এলিয়ে দিয়ে দিব্যি কল্পনার আকাশে পাখনা মেলে দেওয়া যায়। জোধপুর থেকে সামান্য দূরত্বেই পর্যটনের এই বালির স্বর্গ। যাওয়ার সেরা সময় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি।