আসছে টিকা, সব পুরসভাকে তৈরি হওয়ার নির্দেশ
আসছে করোনা ভ্যাকসিন(Corona Vaccine)। আর তাই টিকা কর্মসূচির জন্য রাজ্যের সব পুরসভাকে (Municipality (প্রস্তুতির নির্দেশ দিল রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। প্রস্তুতি পর্বে ও ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হলে কী করতে হবে, তার বিস্তারিত নির্দেশিকা দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব। নতুন বছরের শুরুতেই টিকা দেওয়া হবে ধরে পুরসভা ও পুরনিগমভিত্তিক টাস্ক ফোর্স তৈরির কথা বলা হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সেই টাস্ক ফোর্সের(Task force) প্রথম বৈঠক করে ফেলে তা জেলা ও রাজ্য প্রশাসনকে জানানোর নির্দেশ জারি হয়েছে। পুরসভা এলাকার মধ্যে কীভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, যাঁদের দেওয়া হবে তাঁদের তথ্যপঞ্জি তৈরি, সরবরাহের মতো বিষয়গুলি নিয়ে মাইক্রো প্ল্যানিং করতে বলা হয়েছে।
সেইসঙ্গে বিশেষভাবে দু’টি বিষয়ে পুরসভার টাস্ক ফোর্সকে সতর্ক থাকতে এবং পরিকল্পনা নিতে বলা হয়েছে নির্দেশিকায়। তার একটি হল, ভ্যাকসিন বিষয়ক যে কোনও গুজবের প্রতিরোধ। এই বিষয়ে আগে থেকে প্রচার, স্থানীয় ধর্মগুরু ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়ে পরিকল্পনা করতে বলা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, ভ্যাকসিন নিয়ে ভিড় প্রতিরোধের ব্লু-প্রিন্ট তৈরি। কারণ, স্বাস্থ্যদপ্তর আশঙ্কা করছে, ভ্যাকসিন এসে গেলে সে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আগে পাওয়ার জন্য আগ্রহ এবং উত্তেজনা দেখা দিতে পারে।
আপাতত ভাবনায় রয়েছে সরকারের। সেই মতো পরিকল্পনা নিতে বলা হয়েছে নির্দেশিকায়।
পাশাপাশি রাজ্য সরকার(West Bengal) স্পষ্ট জানিয়েছে, ভ্যাকসিন(Vaccine) কর্মসূচির জন্য অন্যান্য স্বাস্থ্য পরিষেবা ও টিকাকরণের কাজ ব্যাহত করা যাবে না। স্বাস্থ্যসচিব তাঁর নির্দেশিকায় জানিয়েছেন, বাড়তি কত কর্মী প্রয়োজন এবং যানবাহনই বা কী লাগবে, তার জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা তৈরি করে রাখতে হবে।
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে গত কয়েক মাস আগেই প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য সরকার। যেহেতু সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মীরাই(Healthworkers) আগে ভ্যাকসিন পাবেন, তাই ইতিমধ্যে ওই কর্মীদের তথ্যপঞ্জি তৈরি করে ফেলেছে সরকার। একইসঙ্গে টিকা সংরক্ষণে রাজ্যজুড়ে কোল্ড চেইন তৈরির কাজও শেষ। ভ্যাকসিন কর্মসূচি পরিচালনার জন্য রাজ্যের স্টিয়ারিং কমিটি, রাজ্যের টাস্ক ফোর্স, জেলা ও ব্লকভিত্তিক টাস্ক ফোর্স গড়া হয়েছে। এবার পুরসভা ও পুরনিগমের জন্য আলাদা টাস্ক ফোর্স তৈরির নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্যদপ্তর। জরুরিভিত্তিতে ওই কাজ শেষ করার নির্দেশ এসেছে। ২৮ ডিসেম্বর এনিয়ে নির্দেশিকা জারি করে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে কমিটি তৈরি এবং তার প্রথম বৈঠক সেরে ফেলতে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভার টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহকুমা শাসককে। অন্যদিকে পুরনিগমের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান হবেন সেখানকার কমিশনার। স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত পদাধিকারীরা কমিটিতে থাকবেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন এনজিও, জনগোষ্ঠীকে নিয়ে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠান, ধর্মগুরু এবং স্থানীয় প্রভাবশালীদের কমিটিতে রাখা হবে। এই কমিটি দ্রুত কাজের রেখচিত্র তৈরি করবে। স্থানীয় ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনার দায়িত্ব থাকছে এই কমিটিরই উপর। রাজ্য যেভাবে আটঘাঁট বেঁধে নেমেছে, তাতে একটা বিষয় পরিষ্কার—যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ হয়ে যাবে বছর শেষেই।