কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

নতুন বছরে সাবেক চেহারায় ফিরছে রাইটার্স

December 30, 2020 | 2 min read

 সংস্কার ও প্রয়োজনীয় রূপটান পর্ব প্রায় শেষ। প্রাকস্বাধীনতা পর্বে ব্রিটিশ জমানার পুরনো চেহারায় ফিরতে চলেছে রাইটার্স বিল্ডিংস(Writers Building)। প্রায় পাঁচ বছর পর প্রায় দেড়শো কোটি টাকা ব্যয়ে এই ভোলবদলের পর ঐতিহাসিক মহাকরণ নতুন বছরের গোড়াতেই পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে। এই মুহূর্তে চলছে চূড়ান্ত পর্বের শেষ তুলির টান। রাইটার্সের মেইন ব্লক, ব্লক-১ এবং ব্লক-২-এর যাবতীয় সংস্কার কাজ কার্যত সারা। এই মুহূর্তে চলছে মার্বেল পালিশ, দেওয়ালে পুট্টির কাজ। পূর্তদপ্তর সূত্রের দাবি, জানুয়ারি মাসেই লালবাড়ির প্রধান তিনটি ব্লক পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে। একইসঙ্গে স্বাধীনতার পর রাজ্যের প্রাক্তন এই সচিবালয়ের কর্মীদের বাড়তি চাপের কথা মাথায় রেখে চারটি নতুন সাদা বিল্ডিং তৈরি হয়েছিল। সংস্কার কাজের জেরে তার মধ্যে দু’টি বিল্ডিং গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ফাঁকা জায়গায় নানা শিল্পকর্ম হতে পারে। বাকি দু’টি বিল্ডিংয়ের ভাগ্য এখনও নির্ধারণ হয়নি। সব মিলিয়ে ১৯৪৭ সালের আগে মহাকরণের মেইন, ১ এবং ২ নম্বর ব্লক যেমন ছিল সংস্কারের পর সেই আকারই দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নবান্নের(Nabanna) এক শীর্ষকর্তা বলেন, জানুয়ারির মধ্যে রাইটার্স বিল্ডিংসের প্রধান এই তিনটি ব্লক পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে। স্বাধীনতার আগে এই ব্লকগুলিতে বড় বড় হল ঘর ছিল। এখনও অবিকল সেরকমই রাখা হয়েছে। তবে সেখানে মন্ত্রী-আমলাদের ঘর হবে কি? জবাবে ওই কর্তা বলেন, বিষয়টি প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে। সেখান থেকে যেমন নির্দেশ আসবে, সেইমতোই কাজ হবে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৫ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) রাইটার্স থেকে সচিবালয় গুটিয়ে গঙ্গাপারের নীল-সাদা বাড়িতে নিয়ে যান। সেই সময় তিনি বলেন, প্রায় ২৪০ বছরের ভারে ন্যুব্জ মহাকরণে সংস্কার প্রয়োজন। সেই কাজ শেষ হলে মন্ত্রিসভা নিয়ে তিনি ফের রাইটার্সে ফিরে আসবেন। তৎকালীন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র(Sanjay Mitra) জানিয়েছিলেন, ছ’মাস থেকে এক বছরের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর সচিবালয় ফের ডালহৌসির লালবাড়িতে ফিরে আসবে। কিন্তু তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় সাত বছর। ব্রিটিশ যুগে যে-বাড়ি থেকে গোটা ভারত শাসন করতেন ইংরেজরা সেখানে আদৌ মন্ত্রী-আমলারা বসবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। সেই সূত্রে বিধানসভা ভোটের আগে রাইটার্স বিল্ডিংসের প্রধান ব্লকগুলির সেজে ওঠা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩-র শেষে নবান্ন চালু হলেও রাইটার্স থেকে সরকারি অফিস পুরোপুরি স্থানান্তরিত হতে লেগেছে আরও কয়েকমাস। তারপর সংস্কারের কাজের প্রয়োজনীয় নির্মাতা সংস্থা বাছাইতেও লেগেছে অনেক সময়। হেরিটেজ বিল্ডিং হওয়ায় লালবাড়িতে হাতুড়ি মারার আগে নিতে হয়েছে একাধিক সরকারি ছাড়পত্র। সেখানে রাজ্য হেরিটেজ কমিশন থেকে লন্ডন এবং জার্মানির বিশেষজ্ঞ-স্থপতিদের মতামত নেওয়া হয়েছে। গোটা বাড়ির সংস্কারের নীল-নকশা তৈরির দায়িত্বে ছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকচার বিভাগের সদস্যরা। গোটা ব্যবস্থাপনার নজরদারিতে স্বরাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বের রয়েছে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। দীর্ঘদিন কার্যত থমকে থাকার পর ২০১৫ সালে রাইটার্স সংস্কারের কাজে গতি আসে। পাঁচ বছর পর সেই কাজের মূল অংশ এখন প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kolkata, #Writers Building, #renovation

আরো দেখুন