কৃষি আইন বাতিলে অনড় কৃষকরা
দিল্লির(Delhi) রেকর্ড ঠান্ডাতেও আন্দোলনের(Protests) রাস্তা থেকে কোনওভাবেই সরছেন না কৃষকরা(Farmers)। বছরের শুরুতে রাজধানীর তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দাবি না মিটলে ওই ঠান্ডা উপেক্ষা করেই আন্দোলন আরও তীব্র করার হুমকি দিয়েছেন কৃষকরা। গোটা জানুয়ারি মাস আন্দোলন চলবে বলে শুক্রবার রাতে জানিয়ে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ২৩ জানুয়ারি তাঁরা কিষান চেতনা দিবস(KisanChetnaDiwas) পালন করবেন বলে ঘোষণা করেছেন। সরকারও ভেবে উঠতে পারছে না, কী হবে সমাধানের পথ। আগামী সোমবার, ৪ জানুয়ারি ফের কেন্দ্র-কৃষক সপ্তম দফার বৈঠক রয়েছে। তাই তিন নয়া কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে অনড় কৃষক সংগঠনগুলির মন জয়ের রাস্তা খুঁজছে কেন্দ্র। এদিকে দিল্লি-উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর সীমানায় বিক্ষোভরত এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম গলতান সিং(Galtan Singh) (৫৭)। প্রবল ঠান্ডার কারণেই এদিন তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান।
উল্লেখ্য, এর আগের বৈঠকে দিল্লির ঠান্ডা এড়াতে কৃষক পরিবারের মহিলা ও শিশুদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার আবেদন করেছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার। কিন্তু নিজেদের জীবন ও জীবিকার কথা ভেবে মন্ত্রীর সেই কথা পালনে নারাজ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মহিলারা। সিংঘু হোক, কিংবা তিক্রি, গাজিপুর কিংবা চিল্লা অথবা রাজস্থান-হরিয়ানার শাহজাহানপুরে আন্দোলনরত কৃষকদের ‘শক্তি’ হিসেবেই থাকতে চান মহিলারা। গত ২৬ নভেম্বর থেকে তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন কৃষকরা। কৃষিমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎ সংশোধন বিল এবং দিল্লি ও তার আশপাশের দূষণ সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্সের ক্ষেত্রে কৃষকদের অনেকটাই বোঝাতে সক্ষম হয়েছে কেন্দ্র। উল্লিখিত দুটি বিষয়ে কৃষকদের উপর তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই সরকারের তরফে আশ্বাস পেয়ে আন্দোলনরত কৃষকরা কিছুটা হলেও নিশ্চিন্ত। যদিও আইন বাতিলের দাবিতে অটল রয়েছেন তাঁরা। এমএসপি সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ কমিটি গড়ার সরকারি প্রস্তাবেও কৃষকদের তেমন মত নেই। তাই শেষ পর্যন্ত কৃষকদের কোনওভাবেই মানাতে না পারলে পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায় আপাতত কিছুদিনের জন্য নয়া কৃষি আইন কার্যকরের রাস্তা এড়ানো যায় কি না, সেই ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করছে কেন্দ্র। এদিন কৃষকরা জানিয়েছেন, ‘আমাদের চাই পূর্ণ স্বরাজ। তাই স্বাধীনতা আন্দোলনের ধাঁচেই আন্দোলন চলবে। সরকার যে প্রতিশ্রুতিই দিক না কেন, বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবি থেকে সরে আসার কোনও প্রশ্নই নেই।’ এরই মধ্যে বর্ষশেষের রাতে সিংঘুতে বাজি পুড়িয়েছেন বিক্ষোভরত কৃষকরা। নববর্ষ উদযাপন? প্রশ্ন করায় গর্জে উঠেছেন কৃষকরা, ‘কোনও নিউ ইয়ার সেলিব্রেশন নয়। এই কর্মসূচি চাষিদের প্রতিবাদ। যেদিন বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন বাতিল হবে, সেদিনই কৃষকরা নববর্ষ পালন করবেন।’ অন্যদিকে মধ্যপ্রদেশের ছত্তরপুরে বিদ্যুতের বিল না মেটাতে পারায় এক কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। সুইসাইড নোটে তিনি বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ এনেছেন।