দ্রুত ধান কেনা শুরু করুক এফসিআই, চাইছে খাদ্যদপ্তর
রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে অবিলম্বে ধান কেনা শুরু করতে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা এফসিআই’কে বলল রাজ্যের খাদ্যদপ্তর। কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার ব্যাপারে এফসিআই-কে সহযোগিতা করা হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। চলতি খরিফ মরশুমে এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ১২ লক্ষ টনের বেশি ধান কেনা হয়েছে। চলতি মরশুমে এফসিআই’কে ছ’লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে রাজ্য। কয়েকদিন আগে খাদ্যসচিব পারভেজ আমেদ সিদ্দিকি এফসিআই’র স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ধান কেনা নিয়ে আলোচনা করেন। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick) জানিয়েছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধান কেনার কাজ এফসিআই’কে শুরু করতে হবে। রাজ্য সরকার যে স্থায়ী ধান ক্রয় কেন্দ্র খুলেছে, সেই পরিকাঠামো ব্যবহার করতে পারবে এফসিআই। এর জন্য অতিরিক্ত কাউন্টার খোলা হবে। তবে রাজ্য সরকার যেভাবে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনে, এফসিআই’কে সেভাবেই কাজ করতে হবে। কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দিতে হবে। রাজ্য সরকারের কাছে ধান বিক্রির জন্য যে কৃষকরা নাম লিখিয়েছেন, তাঁদের নথিতে এফসিআই’কে ধান বিক্রির কথা উল্লেখ করতে হবে। কারণ বেশি সংখ্যক কৃষকের থেকে ধান কিনতেই এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মাথাপিছু ৪৫ কুইন্টাল ধান কেনা হবে। এফসিআই ও রাজ্যের খাদ্যদপ্তর— দুইয়ে মিলিয়েই ওই পরিমাণ ধান বিক্রি করতে পারবেন একেকজন কৃষক।
পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) ধান উৎপাদনে প্রথম। কিন্তু এখান থেকে যে পরিমাণ ধান এফসিআই প্রতি বছর কেনে, তার পরিমাণ খুবই কম। খাদ্যদপ্তরের হিসেব বলছে, গত বছর এই রাজ্য থেকে মাত্র ৭০ হাজার টন চাল সংগ্রহ করেছিল এফসিআই। যে পদ্ধতিতে এফসিআই কেনে, তা নিয়ে আপত্তি আছে খাদ্যদপ্তরের। এফসিআই সাধারণত বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে ধান কেনে। আবার কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কিনে কখনও সরাসরি রাইস মিল থেকেও চাল কেনে তারা। রাইস মিলগুলি কোন কৃষকদের থেকে ধান কিনেছে, সেই তালিকা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু রাইস মিলগুলি সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান কিনেছে কি না, সেব্যাপারে সংশয় থেকে যায়। তবে তার তুলনায় খোলাবাজারে ধানের দাম সাধারণত অনেকটাই বেশি থাকে। ফলে এই ব্যবস্থায় রাইস মিলগুলি লাভবান হয় বেশি। তাই খাদ্যদপ্তর চাইছে, এবার এফসিআই রাজ্য সরকারের পদ্ধতি অনুসরণ করে ধান কিনুক। এফসিআই’র আধিকারিকদের বক্তব্য, রাজ্যে ধান কেনার মূল দায়িত্ব এখানকার সরকারের।
রাজ্য সরকার বিপুল পরিমাণ ধান (Paddy) কিনলেও তা মজুত করা সমস্যার ব্যাপার। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি— এই সময়কালেই সব থেকে বেশি ধান কেনা হয়। রাইস মিলগুলিও তাড়াতাড়ি চাল নেওয়ার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু গুদামে স্থান সঙ্কুলানের অভাবে চাল নিতে পারে না সরকার। এফসিআই বেশি পরিমাণ ধান কিনলে একদিকে বেশি সংখ্যক কৃষক ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের সুবিধা পাবেন। অন্যদিকে, এফসিআই’র গুদামেও চাল রাখা যাবে।