অবশেষে জয়ের মুখ দেখল ইস্ট বেঙ্গল
অবশেষে আইএসএলে (ISL) প্রথম জয়ের স্বাদ পেল এসসি ইস্ট বেঙ্গল। রবিবার ভাস্কোর তিলক ময়দানে লিগ টেবিলে এগারো নম্বরে থাকা ওড়িশা এফসি’কে ৩-১ গোলে পরাস্ত করল রবি ফাউলারের দল। তবে জিতলেও লাস্টবয়রা দেখিয়ে দিলেন লাল-হলুদ ব্রিগেডের রক্ষণ কতটা ভঙ্গুর। দুই অর্ধ মিলিয়ে ওড়িশা এফসি মোট পাঁচটি নিশ্চিত সুযোগ পেয়েছিল। ইস্ট বেঙ্গলের গোল লক্ষ্য করে ২১টি শট নিয়েছে তারা। তার মধ্যে তিনকাঠির মধ্যে রেখেছে সাতটি। তিনটি ক্ষেত্রে লাল-হলুদ গোলরক্ষক দেবজিৎ মজুমদার দলের নিশ্চিত পতন রোধ করেন। ৬১ মিনিটে প্রতিপক্ষ বক্সে উঠে আসা জেকবের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। তাই প্রথম জয়ের পরেও রক্ষণ নিয়ে চিন্তায় থাকবেন ব্রিটিশ কোচ। মরশুমে প্রথম জয় পিলকিংটন-মাঘোমাদের উজ্জীবিতও করবে। আট ম্যাচে ছ’পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানেই রইল ফাউলার-ব্রিগেড। লিগের প্রথম পর্বের বাকি দু’টি ম্যাচে ইস্ট বেঙ্গলকে শক্তিশালী এফসি গোয়া (৬ জানুয়ারি) ও বেঙ্গালুরু এফসি’র (৯ জানুয়ারি) মুখোমুখি হতে হবে।
প্রথম সাতটি ম্যাচে ওড়িশা এফসি ১১টি গোল খেয়েছিল। তার মধ্যে আটটি গোল হয়েছিল প্রথমার্ধে। এবার ওড়িশা এফসি’র রক্ষণ মোটেই শক্তপোক্ত নয়। ম্যাচের ১২ মিনিটে এগিয়ে যায় এসসি ইস্ট বেঙ্গল। ডান প্রান্ত থেকে লম্বা থ্রো করেন লাল-হলুদ জার্সি গায়ে প্রথম ম্যাচে খেলতে নামা রাজু গায়কোয়াড়। তাঁর থ্রো স্টিভন টেলরের গায়ে লেগে স্কাই হয়ে যায় পিলকিংটনের কাছে। ওড়িশার ডিফেন্ডার জি বোরাকে ঘাড়ের কাছে নিয়ে হেডে গোল করে ইস্ট বেঙ্গলকে এগিয়ে দেনএই আইরিশ ফুটবলার (১-০)। প্রথম ম্যাচ থেকেই এই আক্রমণাত্মক মিডিও নজর কাড়ছেন। এদিন তিনি লক্ষ্যভেদ করার পাশাপাশি মাঘোমার গোলটির ক্ষেত্রেও অ্যাসিস্ট করেন। দলের তৃতীয় গোলটির সময়ে তাঁর পা থেকে আক্রমণের সূচনা হয়। তাই প্রত্যাশামতোই পিলকিংটন ম্যাচের সেরা হয়েছেন। ২৫ মিনিটে তাঁর একটি শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
ইস্ট বেঙ্গল (East Bengal) কোচ এদিন চার ডিফেন্ডার নিয়ে দল সাজান। রাজু ও বিকাশ জাইরুকে তিনি প্রান্তিক হাফে খেলান। মাঝমাঠে ব্লকার হিসেবে রাখেন সদ্য চোটমুক্ত মিলন সিংকে। তবে এই পাহাড়ি ফুটবলার নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। স্টেইনম্যান আক্রমণভাগকে সাহায্য করেছেন। তাই ইস্ট বেঙ্গল মাঝমাঠে তৈরি হয়েছে ফাঁকফোকর। সেই জন্যই দুই স্টপার স্কট নেভিল ও ড্যানি ফক্স চাপে পড়ে যান। ওড়িশার ডিয়েগো মরিসিও এবং ম্যানুয়েল ওনু ইস্ট বেঙ্গল রক্ষণকে বে-আব্রু করে দেন। ৩৯ মিনিটে পিলকিংটনের বাড়ানো বল ধরে বাঁদিক দিয়ে ঢুকে দুরূহ কোণ থেকে চমৎকারভাবে বলটি গোলে রাখেন মাঘোমা (২-০)। ম্যাচের ৭৩ মিনিটে মাঘোমার পরিবর্তে মাঠে নামেন ইস্ট বেঙ্গলের নতুন স্ট্রাইকার ব্রাইট এনোবাখারে। ৮৮ মিনিটে দলের তৃতীয় গোলটি আসে তাঁর পা থেকেই। তিনি যে সুযোগসন্ধানী স্ট্রাইকার, তা এদিন বোঝা গিয়েছে। ব্রাইটের শট ওড়িশার গোলরক্ষক প্রতিহত করলে ইস্ট বেঙ্গলের পরিবর্ত ফুটবলার সুরচন্দ্র সিং বলটি পান। তাঁর পাস থেকে ৩-০ করেন ব্রাইট। তবে ম্যাচের ৯৩ মিনিটে ওড়িশা একটি গোল শোধ করায় ফের ক্লিনশিট রাখতে ব্যর্থ লাল-হলুদ। ওড়িশার হয়ে স্কোরশিটে নাম তোলেন মরিসিও (৩-১)।