লকডাউন পর্বে রাজ্যে সওয়া লক্ষ বেসরকারি চাকরি, বলছে তথ্য
কোভিড… লকডাউন (Lock Down) সামলেও কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেল বাংলা। চলতি আর্থিক বছরের গোড়া থেকে (এপ্রিল-অক্টোবর) রাজ্যের বেসরকারি ক্ষেত্রে চাকরি পেয়েছেন প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার যুবক-যুবতী। অর্থাৎ, প্রতি মাসে গড়ে কাজ পেয়েছেন প্রায় ১৭ হাজার ১৪২ জন। এমনই তথ্য সামনে এনেছে শ্রমমন্ত্রকের আওতায় থাকা এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন। করোনা পর্বে যেখানে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন, বেতন ছাঁটাইয়ের কোপে পড়েছেন, সেখানে কর্মসংস্থানের এই সাফল্য আশার আলো দেখাচ্ছে বাংলাকে। স্বভাবতই রাজ্যের ভোট-রাজনীতিতে কেন্দ্রের প্রকাশিত তথ্য শাসকদলকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে বলে মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসের হিসেব ধরলে কর্মপ্রাপ্তির সংখ্যা আরও বাড়বে বলে সূত্রের খবর।
এপ্রিল-মে মাস কেটেছে পুরোপুরি লকডাউনের মধ্যে। সেই সময় নতুন চাকরির দরজা বন্ধ থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সেই পরিস্থিতিতেও রাজ্যের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেয়েছেন অনেকেই। সংখ্যাটা প্রায় ১ হাজার। জুন মাস থেকে শুরু আনলক পর্ব। তখন থেকেই খুলে যায় চাকরির বাজার। অক্টোবর মানে পুজোর মাস। ওই মাসে কাজ পেয়েছেন প্রায় ৩৩ হাজার যুবক-যুবতী। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য বলছে, এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ পেয়েছেন ২২ থেকে ২৫ বছর বয়সি ছেলে-মেয়েরা।
মহামারীর জেরে নড়বড়ে হয়ে পড়ে দেশের সার্বিক অর্থনীতি। তার খেসারত দিতে হচ্ছে শিল্পক্ষেত্রকেও। তাদের আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। তার মধ্যেও এত কর্মসংস্থান কীভাবে? শিল্পমহলের কর্তারা বলছেন, আনলক পর্বের পর নিউ নর্মাল শুরু হতেই সাধারণ মানুষ কাজে যোগ দিতে থাকেন। ধীরে ধীরে ছন্দে ফেরে স্বাভাবিক কাজকর্ম। তার পর থেকেই একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ায় অর্থনীতি। পর্যটন কিংবা অন্য কয়েকটি পরিষেবা শিল্প বাদ দিলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে। ফলে ভোগ্যপণ্য এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নতুন চাকরি জায়গা তৈরি হয়েছে। সেটাই কর্মসংস্থান বৃদ্ধির নেপথ্যে অনুঘটকের কাজ করেছে। পাশাপাশি, শিল্পকর্তারা এটাও বলছেন, বাস্তবে কিন্তু চাকরির বাজার আরও একটু ভালো। তাঁদের যুক্তি, করোনার সময়কালে মানুষ একপ্রকার বাড়িতে বন্দি থেকেছেন। ‘ওয়ার্ক ফর্ম হোম’ করেছেন। সেই কারণে বাড়ি বাড়ি পরিষেবা বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজে বিভিন্ন সংস্থা কর্মী নিয়োগের রাস্তায় হেঁটেছে। ফলে বহু বেকার ছেলে-মেয়ের কাজ জুটেছে ছোটখাট সংস্থাতেও।
শ্রমমন্ত্রক নতুন পিএফ গ্রাহকের যে তথ্য সামনে এনেছে, তাতে এই বাড়তি কর্মসংস্থানের (Employment) তথ্য নেই। কারণ, পিএফের সুবিধা পান তুলনামূলক বড় সংস্থার কর্মীরা। যেখানে অন্তত ২০ জন কাজ করেন। হোম ডেলিভারি বা ই-কমার্স সংস্থায় চাকরি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু তাদের বহর বড় হওয়া সত্ত্বেও সেখানকার কর্মীদের বেশিরভাগই পিএফের আওতায় আসেন না।