কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

ঘেরাও-হেনস্থা বরদাস্ত নয় যাদবপুরে, সরব শিক্ষকেরা

January 5, 2021 | 2 min read

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার উপাচার্যকে যৌথ ভাবে স্মারকলিপি দিলেন শিক্ষকেরা। তাতে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বৈঠকের সময় বেঁধে দিতে হবে। রাতভর ঘেরাও, হেনস্থার ঘটনা ঘটলে তাকে ‘জিরো টলারেন্স’ হিসেবে গণ্য করবেন শিক্ষকেরা। কোনও ভাবেই এই ধরনের পরিস্থিতি বরদাস্ত করা হবে না। 

ভর্তি, পরীক্ষা এবং পরীক্ষার ফল প্রকাশ সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগে সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের হাতে বার বার ঘেরাও হয়েছেন সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন এবং অন্যান্য শীর্ষ পদাধিকারীরা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, বারংবার ঘেরাওয়ের জেরে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস (Suranjan Das) এবং দুই সহ-উপাচার্য পদত্যাগের ইচ্ছা পর্যন্ত প্রকাশ করেছিলেন। ঘেরাওয়ের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীববাবু। উপাচার্য ক্যাম্পাসে বৈঠক করতে এলে তাঁকে  ভোর সাড়ে চারটে পর্যন্ত বৈঠক করতে হয় এবং তার ফলে তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই তালিকায় শেষ সংযোজন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিনের পদত্যাগ। যার পিছনে ছিল এক ছাত্রনেতার টেলিফোনে অমার্জিত ব্যবহারের অভিযোগ।

বার বার ঘেরাওয়ের পরিপ্রেক্ষিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জুটা) উপাচার্যকে আগেই লিখিত ভাবে জানিয়েছিল, ভর্তি, পরীক্ষা এবং ফল প্রকাশ প্রক্রিয়া (জুমস) ঢেলে সাজানোর কমিটির বৈঠকে মুখোমুখি বসবে না তারা। একমাত্র অনলাইনে বৈঠক হলেই সেখানে উপস্থিত থাকবে। কিন্তু তার পরেও অনেক শিক্ষক জুমস কমিটির বৈঠকে সশরীরে বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজির থেকে অংশগ্রহণ করেছেন। তার পরেও ঘেরাওয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ বার তার বিরুদ্ধেই যৌথ ভাবে সরব হল শিক্ষক সংগঠন জুটা, ওয়েবকুটা এবং আবুটা-র যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। উপাচার্যের কাছে দাবি করা হল, বৈঠকের মেয়াদ বেঁধে দিতে হবে। এক পক্ষের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার নামে ঘেরাও, হেনস্থা করে আর এক পক্ষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করা যাবে না।

এ দিন উপাচার্যকে দেওয়া স্মারকলিপিতে পরীক্ষা এবং ফল প্রকাশে দেরির জন্য অনেকটাই দায়ী করা হয়েছে পরীক্ষা  নিয়ামকের দফতরকে। শিক্ষক সংগঠনগুলির দাবি, অবিলম্বে এই দফতরকে সক্রিয় করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন দক্ষতা সম্পন্ন আধিকারিক নিয়োগ। শিক্ষকেরা আরও দাবি করেছেন, পরীক্ষা সংক্রান্ত সব তথ্য রাখতে হবে এই দফতরকেই। যদি তৃতীয় পক্ষকে নিয়োগ করা হয়, সব রকম গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে। আর সেই দায়িত্ব নিতে হবে পরীক্ষা নিয়ামকের দফতরকেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় সব পক্ষের অংশগ্রহণ খুবই জরুরি। কিন্তু ২০১১ থেকে যাদবপুরে নতুন স্ট্যাটিউট না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের কাজে সব পক্ষ অংশগ্রহণ করতে পারে না। জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় এ দিন বলেন, ‘‘স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়েছে, খসড়া স্ট্যাটিউটকে অবিলম্বে চূড়ান্ত করে প্রয়োগ করতে হবে। বিধানসভা ভোটের আগে শিক্ষক এবং আধিকারিকদের শূন্য পদ পূরণ করতে হবে।’’ আবুটা-র পক্ষে গৌতম মাইতি বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসকে নৈরাজ্য-মুক্ত করে সংবিধানসম্মত, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখা না হলে শিক্ষকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন।’’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#jadavpur university, #Harassment, #Suranjan Das

আরো দেখুন